পক্ষান্তরে তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং পরকাল কামনা করলে, তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীলা আল্লাহ তাদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন।’ [১]
[১] বিভিন্ন দেশ জয়লাভ করার পর যখন মুসলিমদের অবস্থা পূর্বের তুলনায় কিছুটা সচ্ছল হল, তখন মুহাজির ও আনসারদের স্ত্রীদের দেখাদেখি মহানবী (সাঃ)-এর স্ত্রীগণও খোরপোষের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবী জানালেন। নবী (সাঃ) যেহেতু বিলাসহীন জীবন-যাত্রা পছন্দ করতেন, সেহেতু স্ত্রীদের এই দাবীতে বড় দুঃখিত হলেন এবং এক মাসের জন্য স্ত্রীদের নিকট থেকে আলাদা হয়ে একাকী বাস করলেন। অবশেষে আল্লাহ তাআলা এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন। উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর সর্বপ্রথম তিনি আয়েশা (রাঃ) -কে উক্ত আয়াত শুনিয়ে তাঁকে তাঁর সংসারে থাকা ও না থাকার ব্যাপারে এখতিয়ার দিলেন এবং বললেন, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে পিতা-মাতার পরামর্শ নিয়ে যা করার করবে। আয়েশা (রাঃ) বললেন, আপনার বিষয়ে পরামর্শ করব তা কি করে হয়? বরং আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে পছন্দ করি। অন্য সকল স্ত্রীগণও এই একই মত ব্যক্ত করলেন এবং কেউ নবী (সাঃ)-কে ত্যাগ করে পার্থিব প্রাচুর্য ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে প্রাধান্য দিলেন না। (সহীহ বুখারী, তাফসীর সূরা আহযাব) সেই সময় নবী (সাঃ)-এর সংসারে নয়জন স্ত্রী ছিলেন; পাঁচজন ছিলেন কুরাইশ বংশের। আয়েশা, হাফস্বা, উম্মে হাবীবা, সাওদা ও উম্মে সালামা (রাঃ) এবং এ ছাড়া বাকি চার জন হলেন; সাফিয়্যা, মাইমুনা, যায়নাব ও জুওয়াইরিয়া (রাঃ) । অনেকে স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে পৃথক হয়ে যাওয়ার এখতিয়ারকে ত্বালাক বলে গণ্য করেন। কিন্তু এ কথা সঠিক নয়। সঠিক মাসআলা এই যে, এখতিয়ার দেওয়ার পর যদি স্ত্রী পৃথক হয়ে যাওয়াকে বেছে নেয়, তাহলে অবশ্যই ত্বালাক হয়ে যাবে। (আর তা হবে ত্বালাকে রাজয়ী; ত্বালাকে বায়েনাহ নয়, যেমন কিছু উলামার মত।) আর যদি স্ত্রী পৃথক হয়ে যাওয়াকে বেছে না নেয়, তাহলে ত্বালাক হবে না। যেমন নবী (সাঃ)-এর স্ত্রীগণ পৃথক না হয়ে তাঁর সাথে থাকাকে বেছে নিয়েছিলেন। অথচ এই বেছে নেওয়াকে ত্বালাক গণ্য করা হয়নি। (বুখারীঃ ত্বালাক অধ্যায়, মুসলিম)