20:115 20:122 আয়াতের গ্রুপের জন্য একটি তাফসির পড়ছেন
ولقد عهدنا الى ادم من قبل فنسي ولم نجد له عزما ١١٥ واذ قلنا للملايكة اسجدوا لادم فسجدوا الا ابليس ابى ١١٦ فقلنا يا ادم ان هاذا عدو لك ولزوجك فلا يخرجنكما من الجنة فتشقى ١١٧ ان لك الا تجوع فيها ولا تعرى ١١٨ وانك لا تظما فيها ولا تضحى ١١٩ فوسوس اليه الشيطان قال يا ادم هل ادلك على شجرة الخلد وملك لا يبلى ١٢٠ فاكلا منها فبدت لهما سواتهما وطفقا يخصفان عليهما من ورق الجنة وعصى ادم ربه فغوى ١٢١ ثم اجتباه ربه فتاب عليه وهدى ١٢٢
وَلَقَدْ عَهِدْنَآ إِلَىٰٓ ءَادَمَ مِن قَبْلُ فَنَسِىَ وَلَمْ نَجِدْ لَهُۥ عَزْمًۭا ١١٥ وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَـٰٓئِكَةِ ٱسْجُدُوا۟ لِـَٔادَمَ فَسَجَدُوٓا۟ إِلَّآ إِبْلِيسَ أَبَىٰ ١١٦ فَقُلْنَا يَـٰٓـَٔادَمُ إِنَّ هَـٰذَا عَدُوٌّۭ لَّكَ وَلِزَوْجِكَ فَلَا يُخْرِجَنَّكُمَا مِنَ ٱلْجَنَّةِ فَتَشْقَىٰٓ ١١٧ إِنَّ لَكَ أَلَّا تَجُوعَ فِيهَا وَلَا تَعْرَىٰ ١١٨ وَأَنَّكَ لَا تَظْمَؤُا۟ فِيهَا وَلَا تَضْحَىٰ ١١٩ فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ ٱلشَّيْطَـٰنُ قَالَ يَـٰٓـَٔادَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَىٰ شَجَرَةِ ٱلْخُلْدِ وَمُلْكٍۢ لَّا يَبْلَىٰ ١٢٠ فَأَكَلَا مِنْهَا فَبَدَتْ لَهُمَا سَوْءَٰتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ ٱلْجَنَّةِ ۚ وَعَصَىٰٓ ءَادَمُ رَبَّهُۥ فَغَوَىٰ ١٢١ ثُمَّ ٱجْتَبَـٰهُ رَبُّهُۥ فَتَابَ عَلَيْهِ وَهَدَىٰ ١٢٢
وَلَقَدْ
عَهِدْنَاۤ
اِلٰۤی
اٰدَمَ
مِنْ
قَبْلُ
فَنَسِیَ
وَلَمْ
نَجِدْ
لَهٗ
عَزْمًا
۟۠
وَاِذْ
قُلْنَا
لِلْمَلٰٓىِٕكَةِ
اسْجُدُوْا
لِاٰدَمَ
فَسَجَدُوْۤا
اِلَّاۤ
اِبْلِیْسَ ؕ
اَبٰی
۟
فَقُلْنَا
یٰۤاٰدَمُ
اِنَّ
هٰذَا
عَدُوٌّ
لَّكَ
وَلِزَوْجِكَ
فَلَا
یُخْرِجَنَّكُمَا
مِنَ
الْجَنَّةِ
فَتَشْقٰی
۟
اِنَّ
لَكَ
اَلَّا
تَجُوْعَ
فِیْهَا
وَلَا
تَعْرٰی
۟ۙ
وَاَنَّكَ
لَا
تَظْمَؤُا
فِیْهَا
وَلَا
تَضْحٰی
۟
فَوَسْوَسَ
اِلَیْهِ
الشَّیْطٰنُ
قَالَ
یٰۤاٰدَمُ
هَلْ
اَدُلُّكَ
عَلٰی
شَجَرَةِ
الْخُلْدِ
وَمُلْكٍ
لَّا
یَبْلٰی
۟
فَاَكَلَا
مِنْهَا
فَبَدَتْ
لَهُمَا
سَوْاٰتُهُمَا
وَطَفِقَا
یَخْصِفٰنِ
عَلَیْهِمَا
مِنْ
وَّرَقِ
الْجَنَّةِ ؗ
وَعَصٰۤی
اٰدَمُ
رَبَّهٗ
فَغَوٰی
۪۟ۖ
ثُمَّ
اجْتَبٰهُ
رَبُّهٗ
فَتَابَ
عَلَیْهِ
وَهَدٰی
۟

১১৫-১২২ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত ইবুন আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ ইনসান’কে (মানুষকে) ইনসান বলার কারণ এই যে, তাকে সর্বপ্রথম যে হুকুম দেয়া হয়েছিল তা সে ভুলে গিয়েছিল। হযরত মুজাহিদ (রঃ) ও হযরত হাসান (রঃ) বলেন যে, ঐ হুকুম হযরত আদম (আঃ) ভুলে গিয়েছিলেন। এরপর হযরত আদমের (আঃ) মর্যাদার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। সূরায়ে বাকারা সূরায়ে আরাফ, সূরায়ে হিজর এবং সূরায়ে কাফে শয়তানের (হযরত আদমকে আঃ) সিজদা না করার ঘটনার পূর্ণ তাফসীর গত হয়েছে। সূরায়ে (আরবী) এও এর বর্ণনা আসবে ইনশা আল্লাহ। এ সব সূরায় হযরত আদমের (আঃ) জন্মবৃত্তান্ত, অতঃপর তার আভিজাত্য ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশার্থে ফেরেশতাদেরকে তাঁর প্রতি সিজদাবনত। হওয়ার নির্দেশ দান এবং ইবলীসের গোপন শত্রুতা প্রকাশ ইত্যাদির বর্ণনা রয়েছে। সে অহংকার করতঃ আল্লাহ তাআলার নির্দেশ অমান্য করে। ঐ সময় হযরত আদমকে বুঝানো হয়ঃ “দেখো, এই শয়তান তোমার ও তোমার স্ত্রী। হযরত হাওয়ার (আঃ) শত্রু। সে যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে, অন্যথায় তোমরা বঞ্চিত হয়ে জান্নাত হতে বহিষ্কৃত হবে এবং কঠিন বিপদে পড়ে যাবে। তোমাদেরকে জীবিকা অন্বেষণে মাথা ঘামাতে হবে। এখানে তো তোমরা বিনা পরিশ্রমে ও বিনা কষ্টে জীবিকা প্রাপ্ত হচ্ছে। এখানে যে তোমরা ক্ষুধার্ত থাকবে এটা অসদ্ধ এবং উলঙ্গ থাকবে এটাও অসম্ভ। এই ভিতরের ও বাইরের কষ্ট হতে এখানে বেঁচে আছ। আর এখানে না তোমরা আভ্যন্তরীণ ভাবে পিপাসার তীব্রতায় শাস্তি পাচ্ছ, না বাহ্যিকভাবে রৌদ্রের প্রখরতায় শাস্তি পাচ্ছ। যদি শয়তান তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করে ফেলে তবে তোমাদের থেকে এই আরাম ও শান্তি ছিনিয়ে নেয়া হবে এবং তোমরা বিভিন্ন ধরনের বিপদাপদে ও কষ্টের সম্মুখীন হয়ে পড়বে।” কিন্তু শেষে তারা শয়তানের ফাদে পড়েই যান। সে তাদেরকে শপথ করে বলেঃ “আমি তোমাদের শুভাকাংখী।” পূর্বেই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বলে দিয়েছিলেনঃ “তোমরা জান্নাতের সব গাছেরই ফল খেতে থাকো। কিন্তু সাবধান! এই গাছটির নিকটেও যেয়ো না। কিন্তু শয়তান তাঁদেরকে মিষ্টি কথায় এমন ভাবে ভুলিয়ে দেয় যে, শেষ পর্যন্ত তারা ঐ নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে ফেলেন। সে প্রতারণা করে তাদেরকে বলেঃ “যে এই গাছের ফল খেয়ে নেয় সেই এখানেই চিরকাল অবস্থান করে।”সত্যবাদী ও সত্যায়িত রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ “জান্নাতে এমন একটি বৃক্ষ রয়েছে, যার ছায়ায় আরোহী একশ’ বছর চলতে থাকবে, তথাপি তা শেষ হবে না। ঐ বৃক্ষের নাম হলো ‘শাজারাতুল খুলদ।' (এই হাদীস আবুদ দাউদ তায়ালেসী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)তারা দুজন ঐ নিষিদ্ধ গাছটির ফল খাওয়া মাত্রই তাদের পরিধেয় পোশাক খসে পড়ে ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গ উলঙ্গ হয়ে যায় এবং লজ্জাস্থান প্রকাশ হয়ে পড়ে। হযরত উবাই ইবনু কা'ব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআলা হযরত আদমকে (অঃ) গোধূম বর্ণ, দীর্ঘ দেহ এবং ঘন চুল বিশিষ্ট করে সৃষ্টি করেছিলেন। দেহ খেজুরের গাছের সমান দীর্ঘ ছিল। নিষিদ্ধ গাছের ফল যেমনই খেয়েছেন তেমনই পরিধেয় পোশাক ছিনিয়ে নিয়েছেন। লজ্জাস্থানের দিকে নযর পড়া মাত্রই শরমে এদিক ওদিক লুকাতে থাকেন। একটি গাছে চুল জড়িয়ে পড়ে। তাড়াতাড়ি চুল ছুটাবার চেষ্টা করলেন আল্লাহ তাআলা ডাক দিয়ে বলেনঃ “হে আদম (আঃ)! আমা হতে পালিয়ে যাচ্ছ?” আল্লাহর কালাম শুনে অত্যন্ত আদবের সাথে আরজ করেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! লজ্জায় আমি মাথা লুকাবার চেষ্টা করছি। আচ্ছা বলুন তো, তাওবা করার পরেওকি জান্নাতে প্রবেশাধিকার লাভ করতে পারবো?” উত্তরে বলা হয়ঃ “হা।” “অতঃপর আদম (আঃ) তার প্রতিপালকের নিকট হতে কিছু বানী প্রাপ্ত হলেন আল্লাহ তাআলার এই উক্তির ভাবার্থ এটাই। (এ হাদীসটি মুসনাদে আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে। তবে এ রিওয়াইয়াতটি মুনকাতা বা ছেদ কাটা। এর মারফু হওয়ার ব্যাপারে সমালোচনা হয়েছে)যখন হযরত আদম (আঃ) ও হযরত হাওয়া (আঃ) হতে পোশাক ছিনিয়ে নেয়া হয় তখন তারা জান্নাতের বৃক্ষপত্র দ্বারা নিজেদের দেহকে আবৃত করতে থাকেন। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ডুমুর জাতীয় গাছের পাতা দ্বারা তারা নিজেদের লজ্জা স্থান আবৃত করেন। আল্লাহ তাআলার নাফরমানীর কারণে তারা সঠিক পথ হতে সরে পড়েন। কিন্তু অবশেষে মহান আল্লাহ তাদেরকে সুপথ প্রদর্শন করেন। তিনি তাদের তওবা কবুল করে নেন এবং নিজের বিশিষ্ট বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেন।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত আদমের (আঃ) মধ্যে পরস্পর বাক্যালাপ হয়। হযরত মূসা (আঃ) বলেনঃ “আপনি তো আপনার পাপের কারণে সমস্ত মানুষকে জান্নাত হতে বের করেছেন এবং তাদেরকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন?” উত্তরে হযরত আদম (আঃ) তাঁকে বলেনঃ “হে মূসা (আঃ)! আল্লাহ তাআলা আপনাকে স্বীয় রিসালাত ও কালাম দ্বারা বিশিষ্ট মর্যাদা দান করেছেন। আপনি আমাকে এমন কাজের সাথে দোষারোপ করছেন যা আল্লাহ তাআলা আমার জন্মের পূর্বেই আমার ভাগ্যে লিখে রেখেছিলেন?" অতএব, হযরত আদম (আঃ) হযরত মূসার (আঃ) অভিযোগ খণ্ডন করে বিজয়ী হলেন। (এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ) স্বীয় 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত মূসা (আঃ) হযরত আদমকে (আঃ) বলেনঃ “আল্লাহ তাআলা আপনাকে নিজের হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনার মধ্যে নিজের রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। আর আপনার সামনে তিনি তার ফেরেশতামণ্ডলীকে সিজদা করিয়েছেন। অতঃপর তিনি আপনাকে জান্নাতে। স্থান দিয়েছিলেন। তারপর আপনার পাপের কারণে মানব জাতিকে তিনি যমীনে নামিয়ে দিয়েছেন?" জবাবে হযরত আদম (আঃ) তাঁকে বলেনঃ “আল্লাহ তাআলা আপনাকে স্বীয় রিসালাত ও কালামের মাধ্যমে মনোনীত করেছেন। আর আপনাকে তিনি ঐ ফলক দান করেছেন যাতে সব জিনিসেরই বর্ণনা রয়েছে এবং তিনি আপনার সাথে গোপনীয়ভাবে কথা বলে আপনাকে নিজের নৈকট্য দান করেছেন। আচ্ছা বলুন তো, আল্লাহ তাআলা আমার জন্মের কতদিন পূর্বে তাওরাত লিখেছিলেন?" উত্তরে হযরত মূসা (আঃ) বলেনঃ চল্লিশ বছর পূর্বে।” তখন হযরত আদম (আঃ) তাকে প্রশ্ন করেনঃ “আদম (আঃ) তার প্রতিপালকের হুকুম অমান্য করলো, ফলে সে ভ্রমে পতিত হলো একথা কি আপনি তাওরাতে লিপিবদ্ধ পেয়েছেন?” জবাবে হযরত মূসা (আঃ) বলেনঃ “হা হযরত আদম (আঃ) তখন হযরত মূসাকে (আঃ) বলেনঃ “তাহলে আপনি কেন আমাকে এমন কাজের জন্যে দোষারোপ করছেন যা আল্লাহ তাআলা আমার জন্মেরও চল্লিশ বছর পূর্বে আমার ভাগ্যে লিখে দিয়েছিলেন?” সুতরাং এই বিতর্কে হযরত আদম (আঃ) হযরত মূসার (আঃ)। উপর বিজীয় হন।