أنت تقرأ التفسير لمجموعة الآيات 20:131 إلى 20:132
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
٣

১৩১-১৩২ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবী হযরত মুহাম্মদকে (সঃ) বলছেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি কাফিরদের পার্থিব সৌন্দর্য ও সুখ ভোগের প্রতি আফসোস পূর্ণ দৃষ্টিতে দেখো না। এটা তো অতি অল্প দিনের সুখ ভোগ মাত্র। তাদের রীক্ষার জন্যেই এ সব তাদেরকে দেয়া হয়েছে। আমি দেখতে চাই যে, তারা এ সব পেয়ে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে কি অকৃতজ্ঞ হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কৃতজ্ঞ বান্দাদের সংখ্যা খুবই কম। তাদের ধনীদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তার চেয়ে বহুগুণে উত্তম নিয়ামত তো তোমাকে দান করা হয়েছে। আমি তোমাকে এমন সাতটি আয়াত দান করেছি যা বারবার পঠিত হয় (অর্থাৎ সূরায়ে ফাতেহা)। আর তোমাকে মর্যাদা সম্পন্ন কুরআন দান করা হয়েছে। সুতরাং তুমি তোমার দৃষ্টি ঐ কাফিরদের পার্থিব সৌন্দর্য ও উপভোগের উপকরণের প্রতি নিক্ষেপ করো না। অনুরূপভাবে হে নবী (সঃ) ! তোমার জন্যে তোমার প্রতিপালকের নিকট যে আতিথ্যের ব্যবস্থা রয়েছে তার কোন তুলনা নেই এবং এটা বর্ণনাতীত। তোমার প্রতিপালক প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী।সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্ত্রীদের সাথে স হবাস করা হতে বিরত থাকার শপথ করেছিলেন। তিনি একটি নির্জন কক্ষে অবস্থান করছিলেন। হযরত উমার (রাঃ) সেখানে প্রবেশ করে দেখেন যে, তিনি একটি খেজুরের পাতার চাটাই এর উপর শুয়ে রয়েছেন। চামড়ার একটা টুকরা একদিকে পড়ে রয়েছে এবং কয়েকটি চামড়ার মশক লটকানো আছে। আসবাবপত্র বিহীন ঘরের এ অবস্থা দেখে তার চোখ দুটি অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠলো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! (রোম সম্রাট) কায়সার এবং (পারস্যের বাদশাহ) কিসরা কত সুখে শান্তিতে ও আরাম আয়েশে জীবন যাপন করছে, অথচ আপনি সৃষ্টজীবের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন হওয়া সত্ত্বেও আপনার এই অবস্থা তাঁর একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “হে খাত্তাবের পুত্র! এখনো তো তুমি সন্দেহের মধ্যেই পড়ে রয়েছে! তারা এমন সম্প্রদায় যে, তাদের পার্থিব জীবনেই তাদেরকে তাড়তািড়ি সুখ ভোগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। (পরকালে তাদের কোনই অংশ নেই)।”। সুতরাং জানা গেল যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ক্ষমতা ও সামর্থ থাকা সত্ত্বেও দুনিয়ার প্রতি খুবই অনাসক্ত ছিলেন। যা কিছু হাতে আসতো তা-ই আল্লাহর ওয়াস্তে একে একে দান করে দিতেন এবং নিজের জন্যে এক পয়সাও রাখতেন না।হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি তোমাদের ব্যাপারে ঐ সময়কেই সবচেয়ে বেশী ভয় করি যখন দুনিয়া তার সমস্ত সৌন্দর্যও আসবাবপত্র তোমাদের পদতলে নিক্ষেপ করবে।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “দুনিয়ার সৌন্দর্য ও আসবাবপত্রের অর্থ কি?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “যমীনের বরকত। (এ হাদীসটি মুসনাদে ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে) মোট কথা, কাফিরদের পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্যেই দেয়া হয়।মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমার পরিবারবর্গকে নামাযের আদেশ দাও যাতে তারা আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচতে পারে। নিজেও ওর উপর অবিচলিত থাকো। নিজেকে এবং নিজের পরিবারবর্গকে জাহান্নাম হতে রক্ষা কর।হযরত উমার ফারূকের (রাঃ) অভ্যাস ছিল এই যে, রাত্রে যখন তিনি তাহাজ্জদের নামাযের জন্যে উঠতেন তখন তাঁর পরিবারবর্গকেও জাগাতেন এবং এই আয়াতটি পাঠ করতেন। আল্লাহ পাক বলেনঃ আমি তোমার কাছে কোন জীবনোপকরণ চাই না। তুমি নামাযের পাবন্দী কর, আল্লাহ তোমাকে এমন জায়গা হতে রিযক দিবেন যে, তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা খোদাভীরুদেরকে মুক্তিদান করে থাকেন এবং তাদেরকে কল্পনাতীত জায়গা হতে জীবিকা প্রদান করেন।সমস্ত দানব ও মানবকে শুধুমাত্র ইবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করা হয়েছে। রিযুকদাতা ও ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ। এজন্যেই মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তোমার কাছে রিযক চাই না, বরং আমিই তোমাকে রিযুক দান করে থাকি।বর্ণিত আছে যে, হযরত হিশামের (রঃ) পিতা যখন আমীর-উমারার নিকট গমন করতেন এবং তাদের শান-শওকত দেখতেন তখন তিনি নিজের বাড়ীতে ফিরে এসে এই আয়াতটিই তিলাওয়াত করতেন এবং বলতেনঃ “হে আমার পরিবারবর্গ! তোমরা নামাযের হিফাযত করো, নামাযের পাবন্দী করো, তা হলে আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর দয়া করবেন।" (এটাও মুসনাদে ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত আছে)হযরত সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন সংকীর্ণতার সম্মুখীন হতেন তখন তিনি বলতেনঃ “হে আমার পরিবারবর্গ! তোমরা নামায পড় এবং নামাযকে প্রতিষ্ঠিত রাখো।” হযরত সাবিত (রাঃ) আরো বলেনঃ সমস্ত নবীরই এই নীতিই ছিল যে, কোন কারণে তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়লেই নামায শুরু করে দিতেন। (এটাও মুসনাদে ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে)হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে ইবনু আদম! তুমি নিজেকে আমার ইবাদতের জন্যে মুক্ত করে দাও, আমি তোমার বক্ষকে ঐশ্বর্য ও অভাবহীনতা দ্বারা পূর্ণ করে দিবো। তোমার দারিদ্র ও অভাব দূর করে দিবো। আর যদি তা না কর তবে আমি তোমার অন্তরকে ব্যস্ততা দ্বারা পূর্ণ করবো এবং তোমার দারিদ্র দূর করবো না।” (এ হাদীসটি জামে তিরমিযী ও সুনানে ইবনু মাজাহতে বর্ণিত আছে)হযরত ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যার সমস্ত চিন্তা ফিকির এবং ইচ্ছা ও খেয়াল একমাত্র আখেরাতের জন্যে হয় এবং তাতেই নিমগ্ন থাকে, আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়ার সমস্ত চিন্তা ও উদ্বেগ থেকে রক্ষা করেন। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি শুধু দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন থাকে, সে যে কোন উপত্যকায় ধ্বংস হয়ে যাক এতে আল্লাহ তাআলার কোন পরওয়া নেই।" (এ হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন) অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন ব্যক্তির সমস্ত কাজে আল্লাহ তাআলার উদ্বেগ নিক্ষেপ করেন এবং তার দারিদ্র তার চোখের সামনে করে দেন। মানুষ দুনিয়া হতে ঐ পরিমাণই প্রাপ্ত হবে যে পরিমাণ তার ভাগ্যে লিপিবদ্ধ আছে। আর যে ব্যক্তি আখেরাতকে তার কেন্দ্র স্থল বানিয়ে নেবে এবং নিজের নিয়াত শুধু ওটাই রাখবে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি কাজে প্রশান্তি আনয়ন করবেন এবং তার অন্তরকে পরিতৃপ্ত করবেন। আর দুনিয়া তার পায়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে।এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্যেই। সহীহ হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আজ রাত্রে আমি স্বপ্নে দেখি যে, আমরা যেন উকবা ইবনু রাফে’র (রাঃ) বাড়ীতে রয়েছি। সেখানে আমাদের সামনে ইবনু তাবের (রাঃ) বাগানের রসাল খেজুর পেশ করা। হয়েছে। আমি এর তা'বীর (ব্যাখ্যা) এই নিয়েছি যে, পরিণামের দিক দিয়ে দুনিয়াতেও আমাদেরই পাল্লা ভারী হবে। উচ্চতাও উন্নতি আমরাই লাভ করবো। আর আমাদের দ্বীন পাক পবিত্র এবং পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ।”

تعظيم تجربتك مع موقع Quran.com!
ابدأ جولتك الآن:

٠%