You are reading a tafsir for the group of verses 6:95 to 6:97
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৯৫-৯৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ পাক সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি যমীনের বপনকৃত দানাকে উপরে এনে চৌচির করে দেন এবং তার থেকে বিভিন্ন প্রকারের সজি ও বর্ধনশীল উদ্ভিদ পয়দা করেন। ওগুলোর রং পৃথক, আকৃতি এবং ডাটা পৃথক। (আরবী)-এর তাফসীরে বলা হয়েছে যে, তিনি একটা প্রাণহীন জিনিসের মধ্য থেকে একটা প্রাণযুক্ত জিনিস অর্থাৎ উদ্ভিদ সৃষ্টি করে থাকেন এবং জীবন্ত জিনিস থেকে নির্জীব জিনিস পয়দা করেন। যেমন বীজ ও দানা যা হচ্ছে নির্জীব জিনিস, এটা তিনি জীবন্ত উদ্ভিদ থেকে পয়দা করে থাকেন। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তাদের জন্যে একটি নিদর্শন হচ্ছে নির্জীব যমীন, আমি ওকে সঞ্জীবিত করেছি এবং তা থেকে শস্য উৎপন্ন করেছি, ফলে তারা তা থেকে আহার করে থাকে।” (৩৬৪ ৩৩)।(আরবী) -এটা -এর উপর সংযুক্ত। তারপর এর তাফসীর করা হয়েছে। অতঃপর (আরবী)-কে এর উপর সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এই সবগুলোরই অর্থ প্রায় একই। কেউ কেউ বলেন যে, এর দ্বারা প্রাণহীন ডিম হতে জীবন্ত মুরগী পয়দা করা বুঝানো হয়েছে। কিংবা এর বিপরীত। আবার কেউ কেউ বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে পাপাচারের ঔরষে সৎ সন্তানের জন্মলাভ এবং সৎ ব্যক্তির ঔরষে পাপাচার ছেলের জন্মলাভ। কেননা, সৎ ব্যক্তি জীবিতের সাথে তুলনীয় এবং পাপী লোক মৃতের সাথে তুলনীয়। এ ছাড়া আরও বহু অর্থ হতে পারে। আল্লাহ পাক বলেনঃ এ সবকিছু আল্লাহই করে থাকেন যিনি হচ্ছেন এক, যার কোন অংশীদার নেই। তাহলে তোমরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন দিকে যাচ্ছ? সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ কেন? আল্লাহ ছাড়া তোমাদের অন্য কারও ইবাদত করার কারণ কি? আলো ও অন্ধকারের সৃষ্টিকর্তা তো তিনিই। যেমন তিনি অত্র সূরার শুরুতেই বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তিনিই অন্ধকার ও আললা বানিয়েছেন।” (৬:১) অর্থাৎ তিনি দিনের আলোকের মধ্য থেকে রাতের অন্ধকারকেও বের করেছেন, আবার তিনি রাতের মধ্য থেকে দিনের আলোকে বের করেছেন যা সারা প্রান্তকে উজ্জ্বলময় করে দিয়েছে। রাত্রি শেষে অন্ধকার দূরীভূত হয় এবং উজ্জ্বল দিন প্রকাশিত হয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “রাত্রি দিনকে ঢেকে ফেলে।” (৭:৫৪) এইভাবে মহান আল্লাহ পরস্পর বিপরীতমুখী জিনিসগুলো সৃষ্টি করে স্বীয় ব্যাপক ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। এজন্যেই তিনি বলেন যে, তিনি রাতের মধ্য থেকে দিনকে ফেড়ে বের করে থাকেন। রাতকে তিনি বিশ্রামকাল করেছেন যেন সমুদয় জিনিস অতে শান্তি ও আরাম লাভ করতে পারে। যেমন তিনি বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “কসম দিনের আলোকের এবং রাত্রির, বন তা প্রশান্ত হয়।” (৯৩:১-২) তিনি আরও বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “শপথ রাত্রির যখন ওটা (সূর্যকে) আচ্ছন্ন করে ফেলে, আর দিবসের যখন ওটা আলোকিত হয়ে পড়ে।” (৯২:১-২) মহান আল্লাহ আর এক জায়গায় বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ ‘কসম দিবসের যখন ওটা ওকে ভালরূপে আলোকিত করে এবং কসম রাত্রির যখন ওটা ওকে সমাচ্ছন্ন করে।" (৯১:৩-৪)।হযরত সুহাইব রূমী (রাঃ)-এর স্ত্রী তাঁর অধিক রাত্রি জাগরণের অভিযোগ করে বলেনঃ “আল্লাহ তা'আলা সবারই জন্যে রাত্রিকে বিশ্রামকাল ও আরামের সময় বানিয়েছেন বটে, কিন্তু সুহাইব (রাঃ)-এর জন্যে নয়। কেননা, যখন তার জান্নাতের কথা স্মরণ হয় তখন তিনি ওর আগ্রহাতিশয্যে সারা রাত শয়নই করেন না। বরং সারা রাত্রি ধরে ইবাদতে মগ্ন থাকেন। আবার যখন তার জাহান্নামের কথা স্মরণ হয় তখন তার দ্রিাই উড়ে যায়।” (এই হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন) মহান আল্লাহ বলেনঃ “সূর্য ও চন্দ্র নিজ নিজ রীতিনীতি ও নিয়ম শৃংখলার উপর চলতে রয়েছে। ওদের গতির নিয়মের মধ্যে অণু পরিমাণও পরিবর্তন ঘটে না, ওগুলো এদিক ওদিক চলে যায় না, বরং প্রত্যেকটির কক্ষপথ নির্ধারিত রয়েছে। গ্রীষ্মকালে ও শীতকালে ওরা নিজ নিজ কক্ষপথে চলতে রয়েছে। এই শৃংখলিত নিয়মের ফলেই দিন রাত্রি কমতে ও বাড়তে রয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “তিনিই সেই আল্লাহ যিনি সূর্যকে দীপ্তিময় বানিয়েছেন এবং চন্দ্রকে কোমল আলো দান করেছেন এবং হ্রাস বৃদ্ধির মনযিল নির্ধারণ করেছেন। যেমন তিনি বলেনঃ “সূর্যের সাধ্য নেই যে চন্দ্রকে ধরে নিবে, আর না রাত্রি দিবসের পূর্বে আসতে পারবে এবং প্রত্যেকেই এক একটি চক্রের মধ্যে সন্তরণ করতে রয়েছে। তিনি আরও বলেনঃ “সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি তাঁর আদেশ পালনে সদা নিয়োজিত রয়েছে। আল্লাহ পাক আরও বলেছেনঃ “এটা তারই নির্ধারিত পরিমাণ, যিনি মহা পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়। কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে না। কেউই তাঁর অগোচরে থাকতে সক্ষম নয়, সেটা যমীন আসমানের অণু পরিমাণই জিনিস হোক না কেন।আল্লাহ তা'আলা যেখানেই রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্রের সৃষ্টির কথা বর্ণনা করেছেন সেখানেই তিনি বাক্যকে (আরবী) শব্দ দ্বারাই শেষ করেছেন। যেমন এখানেও ঐ নিয়মের ব্যক্তিক্রম ঘটেনি। মহান আল্লাহ বলেনঃ “তাদের জানবার পক্ষে রাত্রিও একটা নিদর্শন যে, ওর মধ্য থেকে আমি দিনকে অপসারণ করি, তৎক্ষণাৎ তারা অন্ধকারের মধ্যে থেকে যায়। আর সূর্যও স্বীয় গতিপথে চলতে রয়েছে এবং স্বীয় নির্ধারিত কক্ষের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটা সেই মহা পরাক্রান্ত ও জ্ঞানময়েরই নির্ধারিত পরিমাপ এবং মাপকাঠি।” মহান আল্লাহ (আরবী) সূরার প্রথমভাগে যমীন, আসমান এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী বস্তুসমূহের সৃষ্টি সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি এই নিকটবর্তী আসমানকে নক্ষত্ররাজি দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং ওকে সুরক্ষিত করেছি, এটা মহাপরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানীর নিয়ন্ত্রণ।” (৪১৪১২)।আল্লাহ পাকের উক্তিঃ তিনি তোমাদের জন্যে নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন-যেন তোমরা ওগুলোর সাহায্যে অন্ধকারে পথের সন্ধান পেতে পার, স্থলভাগেও এবং সমুদ্রেও। আল্লাহ তাআলা বলেন যে, এই তারকাগুলো এক তো হচ্ছে আকাশের সৌন্দর্য, দ্বিতীয়তঃ এগুলো দ্বারা শয়তানদেরকে প্রহার করা হয় এবং তৃতীয়তঃ এগুলোর মাধ্যমে স্থলভাগ ও সমুদ্রের অন্ধকারে পথ চেনা যায়। পূর্ববর্তী গুরুজনদের কেউ কেউ বলেছেন যে, তারকারাজি সৃষ্টির মধ্যে শুধুমাত্র তিনটি উদ্দেশ্যই নিহিত রয়েছে। এছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই। যদি কেউ মনে করেন যে, এই তিনটি উদ্দেশ্য ছাড়া আরো উদ্দেশ্য রয়েছে তবে তিনি ভুল বুঝেছেন এবং কুরআনের আয়াতের উপর বাড়াবাড়ি করেছেন। এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি প্রমাণসমূহ খুব বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি, যাতে লোকেরা কিছু জ্ঞান লাভ করতে পারে এবং সত্য ও ন্যায়কে চিনে নিয়ে অসত্য ও অন্যায়কে পরিহার করে।

Maximize your Quran.com experience!
Start your tour now:

0%