৪-৬ নং আয়াতের তাফসীর: মুশরিক ও কাফিরদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, যখনই তাদের কাছে আল্লাহর কোন আয়াত আসে অর্থাৎ কোন মু'জিযা বা আল্লাহ তাআলার একত্ত্বের উপর কোন স্পষ্ট দলীল অথবা রাসূল (সঃ)-এর সত্যতার কোন নিদর্শন এসে পড়ে তখন তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং ওটাকে মোটেই গ্রাহ্য করে না। আর যখন তাদের কাছে সত্য কথা এসে যায় তখন। তারা তা অস্বীকার করতে শুরু করে। এর পরিণাম তারা সতুরই জানতে পারবে। এটা তাদের জন্যে কঠিন হুমকি স্বরূপ। কেননা, তারা সত্যকে মিথ্যা জেনেছে। সুতরাং এখন এই মিথ্যা প্রতিপন্ন করার পরিণাম তাদেরকে অবশ্যই দেখতে হবে। আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করছেন যে, তাদের পূর্ববর্তী লোকেরা, যারা তাদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী ছিল এবং শাসন ক্ষমতাও লাভ করেছিল, আর সংখ্যার দিক দিয়েও তারা অধিক ছিল, তাদেরকেও তিনি শাস্তি থেকে রেহাই দেননি। এটা থেকে তাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত যে, ঐরূপ শাস্তি তাদের উপরও এসে যেতে পারে। তাই আল্লাহ পাক বলেনঃ তারা কি দেখেনি যে, আমি তাদের পূর্বে বহু কওমকে ধ্বংস করে দিয়েছি? অথচ তারা দুনিয়ায় বিরাট শক্তির অধিকারী ছিল! তাদের মত ধন-দৌলত, সন্তান-সন্ততি এবং শান-শওকত তোমরা লাভ করতে পারনি। আমি তাদের উপর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করতাম। তারা দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়নি। তাদেরকে আমি বাগ-বাগিচা, ঝরণা এবং নদ-নদী প্রদান করেছিলাম। এর দ্বারা আমার উদ্দেশ্য ছিল তাদেরকে ঢিল দিয়ে রাখা। অতঃপর তাদের পাপের কারণে আমি তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং তাদের স্থলে অন্য কওমকে এনে বসিয়েছি। পূর্ববর্তী লোকেরা তো তাদের কর্মফল হিসেবে ধ্বংস হয়ে যায়! তাদের পরবর্তী লোকেরাও কিন্তু তাদের মতই আমল করে, ফলে তাদের মত তারাও হালোক হয়ে যায়। অতএব, হে লোক সকল! তোমরাও ভয় কর, নতুবা তোমাদের পরিণতিও তাদের মতই হবে। তোমাদেরকে ধ্বংস করা তাদের তুলনায় আল্লাহর কাছে মোটেই বড় কাজ নয়। তোমরা যে রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছো তিনি। তো তাদের রাসূল অপেক্ষা বেশী মর্যাদার অধিকারী। সুতরাং তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য স্বীকার না কর তবে তোমরা তাদের চেয়ে বেশী শাস্তির যোগ্য হয়ে যাবে।
0%