তুমি আমাকে যে আদেশ করেছ, তা ব্যতীত তাদেরকে আমি কিছুই বলিনি। (এবং) তা এই যে, তোমরা আমার ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপাসনা কর।[১] আর যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, ততদিন আমি ছিলাম তাদের ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী। কিন্তু যখন তুমি আমাকে তুলে নিলে, তখন তুমিই তো ছিলে তাদের ক্রিয়াকলাপের পর্যবেক্ষক।[২] আর তুমি সর্ব বস্তুর উপর সাক্ষী।
[১] ঈসা (আঃ) তাওহীদ ও এক আল্লাহর ইবাদতের এই দাওয়াত দুধপান কালে দিয়েছিলেন, যেমনটি সূরা মারয়্যামে বলা হয়েছে। অনুরূপ যুবক ও পরিণত বয়সেও (নবুঅত লাভের পরও) এই একই দাওয়াত দিয়েছেন।[২] (تَوَفَّيْتَنِي) এর ভাবার্থ হচ্ছে, যখন তুমি আমাকে পৃথিবী হতে তুলে নিলে, যেমন এর ব্যাখ্যা সূরা আল ইমরানের ৩:৫৫ নং আয়াতে পরিবেশিত হয়েছে। এখান থেকে এ কথাও জানা যায় যে, নবীগণ ততটুকুই (গায়বী খবর) জানতেন, যতটুকুর জ্ঞান আল্লাহ কর্তৃক তাঁদেরকে জানানো হত অথবা নিজের জীবদ্দশায় স্বচক্ষে যা দর্শন করে অর্জন করেছিলেন, এ ছাড়া তাঁদের অন্য কোন (অদেখা) কথার জ্ঞান ছিল না। পক্ষান্তরে অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা তিনিই হন, যিনি অন্যের অবহিত করা ব্যতীত নিজে নিজেই প্রত্যেক জিনিস সম্পর্কে সম্যক অবগত হন এবং যাঁর জ্ঞান আদি ও অন্ত পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত। এই গুণের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ; তিনি ব্যতীত অন্য কারও মধ্যে এই গুণ নেই। আর এ কারণেই একমাত্র তিনিই হচ্ছেন 'আলেমুল গায়ব'। আর তিনি ব্যতীত গায়েব বা অদৃশ্য সম্পর্কে কেউ অবগত নয়। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন নবী করীম (সাঃ)-এর দিকে কিছু উম্মতী আসার চেষ্টা করবে; কিন্তু ফিরিশতাগণ তাদেরকে ধরে অন্য দিকে নিয়ে যাবেন। তখন নবী করীম (সাঃ) তাঁদেরকে বলবেন, 'ওদেরকে আসতে দিন, ওরা তো আমার উম্মত!' কিন্তু ফিরিশতাগণ বলবেন, 'আপনি জানেন না যে, ওরা আপনার তিরোধানের পর আপনার দ্বীনের মধ্যে কি কি বিদআত রচনা করেছিল।' যখন এই কথা শুনবেন, তখন তিনি সেই কথাই বলবেন যা আল্লাহর নেক বান্দা ঈসা (আঃ) বলেছেন, (وَكُنتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَّا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنتَ أَنتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ) অর্থাৎ, যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি ছিলাম তাদের ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী। কিন্তু যখন তুমি আমাকে তুলে নিলে তখন তুমিই তো ছিলে তাদের ক্রিয়াকলাপের পর্যবেক্ষক। (বুখারী, মুসলিম)
0%