মারয়্যাম-তনয় ঈসা বলল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ! আমাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ কর, এ হবে আমাদের ও আমাদের সকলের জন্য তোমার নিকট থেকে নিদর্শন এবং আনন্দোৎসব স্বরূপ।[১] আর আমাদেরকে জীবিকা দান কর। তুমিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা।’
[১] ইসলামী শরীয়তে ঈদের উদ্দেশ্য এ নয় যে, এটি জাতীয় পরবের একটি দিন। যাতে যাবতীয় নৈতিক বন্ধন ও শরয়ী বাধা-নিষেধকে উল্লংঘন করে উচ্ছৃঙ্খলভাবে আনন্দ ও উল্লাস প্রকাশ করা হবে, ঘর-বাহির আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে এবং নানা অনুষ্ঠান উদযাপন করা হবে; যেমন আজকাল এই ধরনেরই কিছু বুঝে মহা উদ্দীপনার সাথে ঈদের পর্ব পালন করা হয়ে থাকে। বরং আসমানী শরীয়তসমূহে ঈদের মর্যাদা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়া অন্য কিছু নয়। যার আসল উদ্দেশ্য এই হয় যে, সেদিন জাতির সকল মানুষ জামাআতবদ্ধভাবে মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে, সকলে (একাকী) তাকবীর ও তাহমীদের আওয়াজ উঁচু করবে। এখানেও ঈসা (আঃ) যে দিনকে ঈদ বানানোর আশা পোষণ করেছেন, তাতে তাঁর উদ্দেশ্য এই যে, আমরা ঐ ঈদে তোমার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা করব, তাকবীর ও তাহমীদ পাঠ করব। পক্ষান্তরে কিছু বিদআতী এই 'ঈদে মায়েদাহ' দ্বারা 'ঈদে মীলাদ' (জন্মদিন) প্রমাণ করার প্রয়াস পেয়েছে। অথচ প্রথমতঃ এ ঘটনা আমাদের শরীয়তের নয়; বরং পূর্ববর্তী শরীয়তের, যাকে ইসলাম বহাল রাখতে চাইলে তার স্পষ্ট বিবৃতি থাকত। দ্বিতীয়তঃ নবীর মুখে 'ঈদ' বানানোর কামনা প্রকাশ করা হয়েছিল, আর নবীও আল্লাহর নির্দেশে শরয়ী বিধি-বিধান বর্ণনা করার জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত হন। (অর্থাৎ, ঈদ একটি শরয়ী বিধান।) তৃতীয়তঃ ঈদের অর্থ ও উদ্দেশ্য তাই হয়, যা উপরে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু 'ঈদে মীলাদ' (জন্মদিন)এ উপরোক্ত কোন কথাই পাওয়া যায় না। এই জন্য এই ঈদের বিদআত হওয়াতে কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়। মুসলিমদের কেবল দুটিই ঈদ; যা ইসলামী শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত; ঈদুল ফিতব্র ও ঈদুল আযহা। এ ছাড়া তৃতীয় কোন ঈদ নেই।