২৭-৩০ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের এই উক্তি খণ্ডন করছেন যে, আল্লাহর। ফেরেশতারা তাঁর কন্যা। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “রহমানের (আল্লাহর) বান্দা (এবং তার আজ্ঞাবহ) ফেরেশতাদেরকে তারা নারীরূপে স্থাপন করেছে, তাদের সৃষ্টির সময় তারা কি হাযির ছিল, তাদের সাক্ষ্য লিখে রাখা হবে এবং তারা (এ ব্যাপারে) জিজ্ঞাসিত হবে।” (৪৩:১৯) আর এখানে মহান আল্লাহ বলেনঃ তারাই ফেরেশতাদেরকে নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে। এটা তাদের অজ্ঞতারই ফল। তাদের এটা মিথ্যা, অপবাদ এবং স্পষ্ট শিরক ছাড়া কিছুই নয়। এটা তাদের অনুমান মাত্র। আর এটা প্রকাশ্য ব্যাপার যে, সত্যের মুকাবিলায় অনুমানের কোন মূল্য নেই। সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা অনুমান ও ধারণা করা হতে বেঁচে থাকো, কেননা ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা।” এরপর আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! যে আমার স্মরণে বিমুখ তাকে তুমি উপেক্ষা করে চল। সে তো শুধু পার্থিব জীবনই কামনা করে। আর যে শুধু পার্থিব জীবনই কামনা করে তার পরিণাম কখনো ভাল হতে পারে না। তার জ্ঞানের সীমাও এটাই যে, দুনিয়া সন্ধানেই সে সদা ডুবে থাকে।উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “দুনিয়া ঐ ব্যক্তির ঘর যার (আখিরাতে) ঘর নেই এবং দুনিয়া ঐ ব্যক্তির মাল যার (আখিরাতে) মাল নেই। আর ওটাকে জমা করার চেষ্টায় ঐ ব্যক্তি লেগে থাকে যার বিবেক-বুদ্ধি নেই। (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন) একটি দুআয়ে মাসূরায় নবী (সঃ)-এর নিম্নলিখিত ভাষাও এসেছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আপনি আমাদের বড় চিন্তা ও চেষ্টার বিষয় এবং আমাদের জ্ঞানের উদ্দেশ্য ও সীমা শুধুমাত্র দুনিয়াকেই করবেন না।”এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সঃ)! নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালকই ভাল জানেন কে তাঁর পথ হতে বিচ্যুত, তিনিই ভাল জানেন কে সৎপথ প্রাপ্ত। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাই তাঁর বান্দাদের উপযোগিতা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখেন। যাকে ইচ্ছা তিনি হিদায়াত দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন। সবকিছু তারই ক্ষমতা, জ্ঞান ও নৈপুণ্য দ্বারা হচ্ছে। তিনি ন্যায় বিচারক। স্বীয় শরীয়তে এবং পরিমাপ নির্ধারণে অন্যায় ও যুলুম কখনো করেন না।