বল, ‘আমি উপদেশের জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না[১] এবং যারা মিথ্যা দাবী করে, আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই।[২]
[১] অর্থাৎ, দাওয়াত ও তাবলীগ দ্বারা আমার উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা; পার্থিব কিছু স্বার্থ অর্জন করা নয়।
[২] অর্থাৎ, নিজের পক্ষ থেকে এমন কথা, যা আল্লাহ বলেননি, তা আল্লাহ বলেছেন বলে চালিয়ে দেব। অথবা তোমাদেরকে এমন কথার দাওয়াত দেব, যার আদেশ আল্লাহ তাআলা আমাকে দেননি। বরং কোন কম-বেশি করা ছাড়াই আল্লাহর আহকাম আমি তোমাদের নিকট পৌঁছে দিই। (تكلف হল, যা জানি কষ্টকল্পনা করে তার থেকে বেশী জ্ঞান প্রকাশ করা, যতটা খেতে বা খাওয়াতে পারি, কষ্ট করে তার থেকে বেশী উত্তম খাবার প্রকাশ করা, যতটা পরতে পারি, কষ্ট করে তার থেকে বেশী উত্তম পোশাক প্রকাশ করা ইত্যাদি।) আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) বলতেন, 'যে ব্যক্তির কোন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান নেই, তার ক্ষেত্রে ألله أعلم বলা উচিত। কারণ আল্লাহ তাআলা নিজ পয়গম্বরকে বলেছেন, "বলে দাও, ( وَمَآ اَنَا مِنَ المْتَُكَلِّفِيْنَ) যারা মিথ্যা দাবী করে, আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই।" (ইবনে কাসীর) এ ছাড়া এতে সাধারণ জীবনেও কৃত্রিমতা ও সাধ্যের বাইরে সাধনা প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার আদেশ পাওয়া যাচ্ছে। যেমন নবী (সাঃ) বলেছেন, (نُهِيْنَا عَنِ التَّكَلُّفِ) "আমাদেরকে কৃত্রিমতা প্রকাশ করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।" (বুখারী ৭২৯৩নং) সালমান (রাঃ) বলেন, (نَهَانَا رَسُوْلُ اللهِ أَنْ نَتَكَلَّفَ لِلضَّيْفِ) অর্থাৎ, রসূল (সাঃ) আমাদেরকে মেহমানের জন্য কৃত্রিমতা প্রকাশ করা থেকে নিষেধ করেছেন। (সহীহুল জামে') এতে বুঝা যায় যে, খাবার, পোশাক, বাসস্থান এবং অন্য বস্তুতে যে কৃত্রিমতা ও উন্নত জীবন যাত্রার নাম দিয়ে ধনবানদের চাল চলন অনেক ধনহীনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, তা ইসলামী শিক্ষার বিপরীত। কারণ ইসলাম আমাদেরকে সাধারণ, আড়ম্বরহীন জীবন যাত্রা ও অকৃত্রিমতা অবলম্বন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।