৫০-৫৪ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা তাঁর সৎ বান্দাদের সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন যে, তাদের জন্যে পরকালে উত্তম পুরস্কার ও সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে এবং রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত। জান্নাতের দরগুলো তাদের জন্যে বন্ধ থাকবে না, বরং সব সময় খোলা থাকবে। দরযা খুলবার কষ্টটুকুও তাদেরকে করতে হবে না।হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “জান্নাতের মধ্যে আদন নামক একটি প্রাসাদ রয়েছে, যার আশে পাশে মিনার রয়েছে। ওর পাঁচ হাজার দর আছে এবং প্রত্যেক দরযার উপর পাঁচ হাজার চাদর রয়েছে। তাতে শুধু নবী, সিদ্দীক, শহীদ এবং ন্যায়পরায়ণ বাদশাহগণ অবস্থান করবেন। (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন) আর এটা তো বিশুদ্ধ হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণিত যে, জান্নাতের আটটি দরযা রয়েছে।মহান আল্লাহ বলেনঃ সেথায় তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে। নিশ্চিন্তভাবে অতি আরামে চার জানু হয়ে তারা বসে থাকবে। আর সেথায় তারা বহুবিধ ফল মূল ও পানীয়ের জন্যে আদেশ দিবে। অর্থাৎ যে ফল অথবা যে সুরা পানাহারের তাদের ইচ্ছা হবে, হুকুমের সাথে সাথে পরিচারকের দল সেগুলো এনে তাদের কাছে হাযির করে দিবে। সেথায় তাদের পার্শ্বে থাকবে আনত নয়না সমবয়স্কা তরুণীগণ। তারা হবে অতি পবিত্র। তারা চক্ষু নীচু করে থাকবে এবং জান্নাতীদের প্রতি তারা চরমভাবে আসক্তা থাকবে। তাদের চক্ষু কখনো অন্যের দিকে উঠবে না এবং উঠতে পারে না। তারা হবে সমবয়স্কা।মহান আল্লাহ বলেনঃ এটাই হিসাব দিবসের জন্যে তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি। অর্থাৎ এসব গুণ বিশিষ্ট জান্নাতের ওয়াদা আল্লাহ তাআলা তাঁর ঐ বান্দাদের সাথে করেছেন যারা তাকে ভয় করে। তারা কবর হতে উঠে, জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি পেয়ে এবং হিসাব হতে অবকাশ প্রাপ্ত হয়ে এই জান্নাতে গিয়ে পরম সুখে বসবাস করবে।অতঃপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, এটাই তার দেয়া রিযক যা কখনো নিঃশেষ হবে না। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমাদের কাছে যা আছে তা শেষ হয়ে যাবে, আর আল্লাহর কাছে যা আছে তা বাকী থাকবে (কখনো নিঃশেষ হবে না)।” (১৬:৯৬)আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তাদের জন্যে রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।”(৮৪:২৫) আরো বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “ওর ফলমূল ও পানাহারের জিনিস এবং ওর ছায়া চিরস্থায়ী, পরহেযগারদের পরিণাম ফল এটাই। আর কাফিরদের পরিণাম ফল জাহান্নাম।” (১৩:৩৫) এ বিষয়ের আরো বহু আয়াত রয়েছে।