3

যাকে অনুমতি দেওয়া হবে সে ব্যতীত আল্লাহর নিকট কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না।[১] এমনকি যখন ওদের অন্তর হতে ভয় বিদূরিত হয়, তখন ওরা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করে, ‘তোমাদের প্রতিপালক কি হুকুম করেছেন?’ উত্তরে তারা বলে, ‘যা সত্য তিনি তাই বলেছেন।[২] তিনি সুউচ্চ, সুমহান।’

[১] "যাকে অনুমতি দেওয়া হবে"-এর উদ্দেশ্য হল নবী, ফিরিশতাগণ ইত্যাদি। অর্থাৎ এঁরাই সুপারিশ করতে পারবেন, অন্য কেউ নয়। কারণ অন্য কারোর সুপারিশ না তো উপকারে আসবে, আর না তাদেরকে সুপারিশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল, সুপারিশের হকদারগণ অর্থাৎ, আম্বিয়া, ফিরিশতা এবং নেক বান্দাগণ ঐ সকল মানুষের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন যারা সুপারিশ পাওয়ার প্রকৃত হকদার। কারণ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদেরই সুপারিশের জন্য অনুমতি হবে, অন্য কারোর জন্য নয়। (ফাতহুল ক্বাদীর) উদ্দেশ্য হল যে, আম্বিয়া, ফিরিশতা এবং নেক বান্দাগণ ছাড়া সেখানে অন্য কেউ সুপারিশ করতে পারবে না। আর এঁরাও আবার কেবল গোনাহগার মু'মিনদের জন্যই সুপারিশ করতে পারবেন; কোন কাফের, মুশরিক এবং আল্লাহর বিরোধীদের জন্য নয়। কুরআন কারীমের অন্য জায়গায় উক্ত দুই বিষয়ের পরিষ্কার বর্ণনা এসেছে। যেমনঃ "কে আছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে?" (সূরা বাক্বারাহ ২:২৫৫ আয়াত) এবং তারা সুপারিশ করে কেবল তাদের জন্য, যাদের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট।" (সূরা আম্বিয়া ২১:২৮ আয়াত)[২] এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ইবনে জারীর ও ইবনে কাসীর (রহঃ) হাদীসের আলোকে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, আল্লাহ তাআলা যখন কোন বিষয়ে অহী করেন, তখন আকাশে অবস্থিত ফিরিশতাগণ ভয়ে কম্পিত ও জ্ঞানশূন্য হয়ে যান। জ্ঞান ফিরে পেলে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অতঃপর আরশ বহনকারী ফিরিশতাগণ অন্য ফিরিশতাগণকে এবং তাঁরা তাঁদের নিমেনর ফিরিশতাগণকে খবর করেন। আর এইভাবে প্রথম আসমানের ফিরিশতাদের নিকট সেই খবর পৌঁছে যায়। (ইবনে কাসীর) فُزِّعَ (এর মূল ধাতু হল فَزَعٌ অর্থাৎ ভয় বা আতঙ্ক। باب تفعيل এ এসে নিরাকরণের অর্থ হয়েছে। অর্থাৎ, যখন আতঙ্ক দূরীভূত করে দেওয়া হয়।