undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

বানী ইসরাঈলের নিকট হতে কতকগুলো প্রতিশ্রুতি গ্রহণও তার বিস্তারিত বিবরণ বানী ইসরাঈলের উপর যে নির্দেশাবলী রয়েছে এবং তাদের নিকট হতে যে। প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়েছে এখানে তারই বর্ণনা দেয়া হচ্ছে এবং তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের আলোচনা করা হচ্ছে। তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর একতুবাদ মেনে নেয় এবং আল্লাহ ছাড়া আর কারও উপাসনা করে। শুধু মাত্র বানী ইসরাঈলই নয়, বরং সমস্ত মাখলুকের প্রতি এ নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ পাক বলেনঃ “সব রাসূলকেই আমি এ নির্দেশ দিয়েছি যে, তারা যেন ঘোষণা করে দেয় আমি ছাড়া উপাসনার যোগ্য আর কেউই নেই,সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর।” তিনি আরও বলেছেনঃ “এবং আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি (তারা মানুষকে বলেছে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তিনি ছাড়া অন্যান্য বাতিল মাবুদ হতে বেঁচে থাকো।” সবচয়ে বড় হক আল্লাহ তায়ালারই, এবং তার যতগুলো হক আছে তন্মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে এই যে, তারই ইবাদত করা হবে এবং তিনি ছাড়া আর কারও ইবাদত করা হবে না।আল্লাহ তা'আলার হকের পর এখন বান্দাদের হকের কথা বলা হচ্ছে। বান্দাদের মধ্যে মা-বাপের হক সবচেয়ে বড় বলে প্রথমে ওরই বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এক জায়গায় আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং মা-বাপের প্রতিও এহসান কর।” অন্যত্র তিনি বলেনঃ “তোমার প্রভুর সিদ্ধান্ত এই যে, তোমরা তিনি ছাড়া আর কারও ইবাদত করবে না এবং মা-বাপের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে।”সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আছে যে, হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বলেনঃ “নামাযকে সময় মত আদায় করা।” জিজ্ঞেস করেনঃ ‘তার পর কোটি? তিনি বলেনঃ মা-বাপের খিদমত করা।” জিজ্ঞেস করেনঃ “এরপর কোনটি?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।'আর একটি সহীহ হাদীসে আছে, একটি লোক জিজ্ঞেস করেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি কার সাথে সৎ ব্যবহার করবো?' তিনি বলেনঃ “তোমার মায়ের সঙ্গে। লোকটি জিজ্ঞেস করেনঃ “তারপরে কার সঙ্গে?' তিনি বলেনঃ তোমার মায়ের সঙ্গে। আবার জিজ্ঞেস করেনঃ তারপর কার সঙ্গে?' তিনি বলেনঃ “তোমার বাপের সঙ্গে এবং তারপরে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে।এ আয়াতে (আরবি) বলেছেন, কেননা (আরবি) অপেক্ষা এতে গুরুত্ব বেশী আছে। কেউ কেউ (আরবি) ও পড়েছেন। হযরত উবাই (রাঃ) এবং হ্যরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা (আরবি)পড়েছেন। সেই ছোট ছেলেকে বলা হয় যার পিতা নেই (আরবি) ঐ সব লোককে বলা হয় যারা নিজের ও স্ত্রী-ছেলে-মেয়ের খাওয়া পরার খরচ চালাতে পারে না। এরপূর্ণ ব্যাখ্যা ইনশাআল্লাহ্ সূরা-ই-নিসার মধ্যে এর অর্থের আয়াতে আসবে। অতঃপর আল্লাহ্ পাক বলেনঃ “সর্বসাধারণের সাথে উত্তম রূপে কথা বল”। অর্থাৎ তাদের সাথে নম্রভাবে ও হাসিমুখে কথা বল। তাদেরকে ভাল কাজের আদেশ দাও ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখ। যেমন হাসান বসরী (রঃ) বলেনঃ “এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা ভাল কাজের আদেশ কর ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখ। আর সহনশীলতা, ক্ষমা ও অপরাধ মাফ করার নীতি গ্রহণ কর। এটাই উত্তম চরিত্র যা গ্রহণ করা উচিত।রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেনঃ “ভাল জিনিসকে ঘৃণা করো না, কিছু করতে না পারলেও অন্ততঃ তোমার ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাৎ কর”। (মুসনাদ-ইআহমাদ)। সুতরাং আল্লাহ্ প্রথমে তার ইবাদতের নির্দেশ দেন, অতঃপর পিতা মাতার খিদমত করা, আত্মীয় স্বজন, ইয়াতীম ও মিসকীনদের প্রতি সুনজর দেয়া এবং জনসাধারণের সাথে উত্তমরূপে কথা বলা ইত্যাদির নির্দেশ দেন। এরপর কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরও আলোচনা করেন। যেমন বলেনঃ নামায পড়, যাকাত দাও।' তারপর এ সংবাদ দেন যে, তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং অল্প লোক ছাড়া তাদের অধিকাংশই অবাধ্য হয়ে যায়। এ উম্মতকেও এই নির্দেশই দেয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর,তার সঙ্গে অন্যকে শরীক করো না, পিতা-মাতার সঙ্গে, আত্মীয়দের সঙ্গে, ইয়াতীম ও মিসকীনদের সঙ্গে, নিকটতম প্রতিবেশীর সঙ্গে, দূরবর্তী-প্রতিবেশীর সঙ্গে, সঙ্গী-সাথীদের সঙ্গে, মুসাফিরদের সঙ্গে এবং দাস দাসীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। মনে রেখো যে, আল্লাহ আত্মম্ভরী অহংকারীকে পছন্দ করেন না। এই উম্মত অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এ সব নির্দেশ মানার ব্যাপারে এবং ওর উপর আমল করার ব্যাপারে অনেক বেশী দৃঢ় প্রমাণিত হয়েছে। অদাহ্ (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি ইয়াহূদীও খ্রীষ্টানদেরকে সালাম দিতেন এবং এর দলীল রূপে আল্লাহর এ নির্দেশটি পেশ করতেনঃ (আরবি) অর্থাৎ তোমরা জন সাধারণের সাথে উত্তমরূপে কথা বলবে। কিন্তু এ বর্ণনাটি গরীব এবং হাদীসের উল্টো। হাদীসে স্পষ্টরূপে বিদ্যমান আছে যে, তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে প্রথমতঃ (আরবি) বলবে না। আল্লাহই সবচেয়ে বেশী জানেন।