You are reading a tafsir for the group of verses 2:75 to 2:77
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৭৫-৭৭ নং আয়াতের তাফসীরএই পথভ্রষ্ট ইয়াহুদ সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবীকে (সঃ) ও সাহাবীবর্গকে (রাঃ) নিরাশ করে দিচ্ছেন যে, এসব লোক যখন এত বড় বড় নিদর্শন দেখেও তাদের অন্তরকে শক্ত করে ফেলেছে এবং আল্লাহর কালাম শুনে বুঝার পরেও ওকে পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তোমরা তাদের কাছে আর কিসের আশা করতে পার? ঠিক এরকমই আয়াত অন্য জায়গায় আছেঃ “তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের কারণে আমি তাদের উপর অভিশাপ নাযিল করেছি এবং তাদের অন্তরকে শক্ত করে দিয়েছি, এরা আল্লাহর কালামকে পরিবর্তন করে ফেলতো।” হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এখানে আল্লাহ তা'আলা তাঁর কালামকে শুনার কথা বলেছেন। এর দ্বারা হযরত মূসা (আঃ)-এর ঐ সহচরদের বুঝানো হয়েছে যারা আল্লাহর কালাম নিজ কানে শুনার জন্যে তার নিকট আবেদন করেছিল। আর তারা পাক-সাফ হওয়ার পর রোযা রেখে হযরত মূসা (আঃ)-এর সঙ্গে তুর পাহাড়ে গিয়ে সিজদায় পড়ে গেলে আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় কালাম শুনিয়েছিলেন। যখন তারা ফিরে আসে এবং আল্লাহর নবী হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহর কালাম বানী ইসরাঈলের মধ্যে বর্ণনা করতে আরম্ভ করেন তখন তারা তা পরিবর্তন করতে শুরু করে।সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, ঐসব লোক তাওরাতের মধ্যে পরিবর্তন আনয়ন করেছিল। এই সাধারণ অর্থটিই সঠিক, যার মধ্যে তারাও শামিল হয়ে যাবে এবং এই বদ স্বভাবের অন্যান্য ইয়াহুদীরাও জড়িত থাকবে। কুরআন পাকের এক জায়গায় আছেঃ “মুশরিকদের মধ্যে কেউ যদি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে তবে তাকে তুমি আশ্রয় দান কর যে পর্যন্ত সে আল্লাহর কালাম শ্রবণকরে।”এখানে ভাবার্থ যেমন আল্লাহর কালাম’ নিজের কানে শুনা নয়, তেমনি এখানে আল্লাহর কালাম অর্থে তাওরাত। এ পরিবর্তনকারী ও গোপনকারী ছিল তাদের আলেমেরা। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর গুণাবলী তাদের কিতাবে বিদ্যমান। ছিল। ওর মধ্যে তারা মূল ভাব পরিবর্তন করে ফেলেছিল। এভাবেই তারা হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল, সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য করে দিতো। ঘুষ নিয়ে ভুল ফতওয়া দেয়ার অভ্যাস করে ফেলেছিল। তবে হাঁ, ঘুষ না পেলে এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হওয়ার ভয় না থাকলে শিষ্যদের হতে পৃথক থাকার সময় মাঝে মাঝে তারা সত্য কথাও বলে দিতো। মুসলমানদের সাথে মিলিত হয়ে বলতো-'তোমাদের নবী সত্য। তিনি সত্যই আল্লাহর রাসূল।' কিন্তু যখন তারা পরস্পরে বসতো তখন একে অপরকে বলতো‘তোমরা মুসলমানদেরকে এসব বললে তারা তোমাদেরকেও তাদের ধর্মে টেনে নেবে এবং আল্লাহর কাছেও তোমাদেরকে লা-জবাব করে দেবে। তাদেরকে এর উত্তর দিতে গিয়ে আল্লাহ পাক বলেন যে, এই নির্বোধদের কি এতটুকুও জ্ঞান নেই যে, আল্লাহ তাদের প্রকাশ্য ও গোপনীয় সব কথাই জানেন?একটি বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমাদের কাছে যেন মুমিনরা ছাড়া আর কেউ না আসে।" তখন কাফিরেরা ও ইয়াহূদীরা পরস্পর বলাবলি করে, “তোমরা মুসলমানদের কাছে গিয়ে বল যে, আমরা ঈমান এনেছি, আবার এখানে যখন আসবে তখন ঐরূপই থাকবে যেমন ছিলে।” সুতরাং ঐসব লোক সকালে এসে ঈমানের দাবী করতো এবং সন্ধ্যায় গিয়ে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতো। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ কিতাবীদের একটি দল বলে মুমিনদের উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে ওর উপর দিনের এক অংশে ঈমান আন এবং অপর অংশে কুফরী কর, তা হলে স্বয়ং মুমিনরাও ফিরে আসবে।" এরা এই প্রতারণা দ্বারা মুসলমানদের গোপন তথ্য জেনে নিয়ে তাদের দলের লোকেকে জানিয়ে দিতে চাইতে এবং মুসলমানদেরকেও পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছে করতো। কিন্তু তাদের চতুরতায় কাজ হয়নি। কারণ মহান আল্লাহ তাদের এই গোপন কথা মুমিনদেরকে জানিয়ে দেন। তারা মুসলমানদের কাছে এসে ইসলাম ও ঈমানের কথা প্রকাশ করলে তারা তাদেরকে জিজ্ঞেস করতেনঃ “তোমাদের কিতাবে কি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর শুভাগমন ইত্যাদির কথা নেই?” তারা স্বীকার করতো। অতঃপর যখন তারা তাদের বড়দের কাছে যেতো তখন ঐ বড়রা তাদেরকে ধমক দিয়ে বলতো-“তোমরা কি নিজেদের কথা মুসলমানদেরকে বলে তোমাদের অস্ত্র তাদেরকে দিয়ে দিতে চাও?' মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বানু কুরাইযার উপর আক্রমণের দিন ইয়াহুদীদের দুর্গের পাদদেশে দাড়িয়ে বলেনঃ “ও বানর, শূকর ও শয়তানের পূজারীদের ভ্রাতৃমণ্ডলী!” তখন তারা পরস্পর বলাবলি করতে থাকেঃ “তিনি আমাদের ভিতরের কথা কি করে জানলেন। খবরদার! তোমাদের পরস্পরের সংবাদ তাদেরকে দিও না, নচেৎ ওটা আগ্লাহর সামনে দলীল হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “তোমরা গোপন করলেও আমার কাছে কোন কথা গোপন থাকে না। তোমরা গোপনে গোপনে যে নিজের লোককে বল- তোমরা নিজেদের কথা তাদেরকে বলো না এবং তোমরা যে তোমাদের কিতাবের কথা গোপন করে থাক, আমি তোমাদের এই সমস্ত খারাপ কাজ হতে সম্পূর্ণ সচেতন। আর তোমরা যে বাইরে তোমাদের ঈমানের কথা প্রকাশ করছে, ওটা যে তোমাদের অন্তরের কথা নয় তাও আমি জানি।"