তিনি পৃথিবীর সব কিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন, (১) তারপর তিনি আকাশের দিকে মনোসংযোগ করেন (২) এবং তাকে (আকাশকে) সপ্তাকাশে (৩) বিন্যস্ত করেন, তিনি সকল বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
(১) এ থেকে সাব্যস্ত করা হয়েছে যে, যমীনে সৃষ্ট প্রত্যেক জিনিস মূলতঃ হালাল, যতক্ষণ না কোন জিনিসের হারাম হওয়ার কথা দলীল দ্বারা প্রমাণিত হবে। (ফাতহুল ক্বাদীর)(২) সালাফদের কেউ কেউ এর তর্জমা করেছেন, "অতঃপর আসমানের দিকে আরোহণ করেন।" (সহীহ বুখারী) মহান আল্লাহর আসমানের উপর আরশে আরোহণ করা এবং বিশেষ বিশেষ সময়ে নিকটের আসমানে অবতরণ করা তাঁর গুণবিশেষ। কোন অপব্যাখ্যা ছাড়াই এর উপর ঐভাবেই ঈমান আনা আমাদের উপর ওয়াজিব, যেভাবে তা ক্বুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।(৩) এ থেকে প্রথমতঃ জানা গেল যে, আসমান (আকাশ) এক অনুভূত বস্তু এবং বাস্তব জিনিস। কেবল উচ্চতা (মহাশূন্য)-কে আসমান বলে আখ্যায়িত করা হয়নি। দ্বিতীয়তঃ জানা গেল যে, আসমানের সংখ্যা হল সাত। আর হাদীস অনুযায়ী দুই আসমানের মধ্যেকার দূরত্ব হল পাঁচ শত বছরের পথ। আর যমীন সম্পর্কে ক্বুরআনে কারীমে এসেছে, {وَمِنَ الْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ} "এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে।" (ত্বালাক্ব ৬৫:১২ আয়াত) এ থেকে যমীনের সংখ্যাও সাত বলে জানা যায়। নবী (সাঃ)-এর হাদীস দ্বারা এ কথা আরো বলিষ্ঠ হয়। বলা হয়েছে, "যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক বিঘত যমীনও আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।" (সহীহ বুখারী ২৯৫৯নং) উক্ত আয়াত থেকে এ কথাও জানা যায় যে, আসমানের পূর্বে যমীন সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সূরা নাযিআত ৭৯:৩০ আয়াতে) আসমানের উল্লেখ ক'রে বলা হয়েছে, {وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَلِكَ دَحَاهاَ} "যমীনকে এর পর বিস্তৃত করেছেন।" এর ব্যাখ্যা এই করা হয়েছে যে, প্রথমে যমীনই সৃষ্টি হয়েছে, তবে পরিষ্কার ও সমতল করে বিছানো হল সৃষ্টি থেকে ভিন্ন ব্যাপার, যেটা আসমান সৃষ্টির পর সম্পাদিত হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর)