আল্লাহর অস্তিত্ব সম্বন্ধে জোরালো দলীলসমূহ আল্লাহ তা'আলা বিদ্যমান রয়েছেন, তিনি ব্যাপক ক্ষমতবান এবং তিনিই সৃষ্টিকর্তা ইত্যাদি প্রমাণ করার পর এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলছেনঃ “কেমন করে তোমরা আল্লাহর অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করছো? অথচ তোমাদেরকে অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বে আনয়নকারী তো একমাত্র তিনিই। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ বলেছেনঃ “তারা কি কোন জিনিস ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে? কিংবা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তা নাকি? বা তারা কি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? (কখনও নয়) বরং তারা বিশ্বাস করে না।” অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছেঃ “নিঃসন্দেহে মানুষের উপর কালের মধ্যে এমন একটি সময় অতীত হয়েছে, যখন সে কোন উল্লেখযোগ্য বস্তুই ছিল না। এ ধরনের আরও বহু আয়াত রয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ কাফিরেরা যে বলবে- “হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে দু’বার মেরেছেন এবং দু’বার জীবিত করেছেন, আমরা আমাদের পাপসমূহ স্বীকার করছি, এর ভাবার্থ এবং এই আয়াতের ভাবার্থ একই যে, তোমরা তোমাদের পিতার পৃষ্ঠে মৃত ছিলে। অর্থাৎ কিছুই ছিলে না। তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, আবার তোমাদেরকে মারবেন। অর্থাৎ মৃত্যু একদিন অবশ্যই আসবে। আবার তিনি তোমাদেরকে কবর হতে উঠাবেন। এভাবেই মরণ দু'বার এবং জীবন দু’বার। আবু সালিহ (রঃ) বলেন যে, কবরে মানুষকে জীবিত করা হয়। আবদুর রহমান বিন যায়েদের (রঃ) বর্ণনা আছে যে, হযরত আদমের (আঃ) পৃষ্ঠে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অতঃপর তাদের কাছে আহাদ বা অঙ্গীকার নিয়ে আল্লাহ তাদেরকে প্রাণহীন করেছেন। আবার মায়ের পেটে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাদের উপর ইহলৌকিক মৃত্যু এসেছে। আবার কিয়ামতের দিন তাদেরকে জীবিত করবেন। কিন্তু এ মতটি দুর্বল। প্রথম মতটিই সঠিক। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ), হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং তাবেঈগণের একটি দলেরও এটাই মত। কুরআন মাজীদে আর এক জায়গায় আছেঃ “আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেন, আবার তিনিই মারেন, অতঃপর কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে একত্রিত করবেন।” যেসব পাথর ও ছবিকে মুশরিকরা পূজা করত, কুরআন ওগুলোকেও মৃত বলেছে। আল্লাহ বলেনঃ “ঐ সব মৃত, জীবিত নয়।” যমীন সম্বন্ধে আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ “তাদের জন্যে মৃত জমীনও নিদর্শন যাকে আমি জীবিত। করি এবং তা হতে দানা বের হয় যা তারা খেয়ে থাকে।”