You are reading a tafsir for the group of verses 28:1 to 28:6
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

হযরত মা’দীকাৱাব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর নিকট এসে তার কাছে আবেদন জানালাম যে, তিনি যেন আমাদেরকে (আরবি) দুশ বার পাঠ করে শুনিয়ে দেন। তখন তিনি বললেনঃ “এটা আমার মুখস্থ নেই, তোমরা বরং হযরত খাব্বাব ইবনে আরাত্ত (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে তার থেকে এটা শ্রবণ কর। কেননা, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে এটা শিখিয়েছেন। সুতরাং আমরা হযরত খাব্বাব ইবনে আরাত্ত (রাঃ)-এর নিকট গমন করলে তিনি আমাদেরকে সূরাটি পড়ে শুনিয়ে দেন। (এটা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) বর্ণনা করেছেন) ১-৬ নং আয়াতের তাফসীর(আারবি)-এর বর্ণনা ইতিপূর্বে গত হয়েছে। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেন যে, এই আয়াতগুলো হলো সুস্পষ্ট কিতাবের অর্থাৎ পবিত্র কুরআনের। সমস্ত কাজের মূল এবং অতীতের ও ভবিষ্যতের সমস্ত খবর এই কিতাবের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।অতঃপর মহান আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সঃ)! আমি তোমার নিকট মূসা (আঃ) ও ফিরাউনের কিছু বৃত্তান্ত যথাযথভাবে বর্ণনা করছি। যেমন অন্য এক জায়গায় তিনি বলেনঃ (আারবি) অর্থাৎ “আমি তোমার নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি।” (১২: ৩) তার সামনে এটা এমনভাবে বর্ণনা করা হচ্ছে যে, তিনি যেন ঐ সময় তথায় বিদ্যমান ছিলেন। ফিরাউন একজন অহংকারী, উদ্ধত ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক ছিল। সে জনগণের উপর জঘন্যভাবে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। সে তাদেরকে পরস্পরে লড়িয়ে দিয়ে, তাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করে তাদেরকে দুর্বল করে দিয়ে স্বয়ং তাদের উপর জোরপূর্বক প্রভুত্ব চালাতে থাকে। বিশেষ করে বানী ইসরাঈলকে তো সে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। অথচ মাযহাবী হিসেবে সেই যুগে তারাই ছিল সর্বোত্তম। ফিরাউন তাদেরকে খুবই নিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে দিয়েছিল। সে সমস্ত ঘৃণ্য কাজ তাদের দ্বারা করিয়ে নিতো। এতে করেও তার প্রাণ ভরেনি। সে তাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে তারা শক্তিশালী হতে না পারে। তাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করার একটি বড় কারণ এই ছিল যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) যখন মিসর দেশের মধ্য দিয়ে স্বীয় স্ত্রী হযরত সারা (রাঃ) সহ গমন করছিলেন এবং তথাকার উদ্ধত বাদশাহ হযরত সারা (রাঃ)-কে নিজের দাসী বানিয়ে নেয়ার জন্যে তাঁর নিকট হতে ছিনিয়ে নিয়েছিল, যাকে আল্লাহ ঐ কাফির থেকে রক্ষা করেছিলেন, তখন তিনি হযরত সারা (রাঃ)-কে সম্বোধন করে বলেছিলেনঃ “তোমার সন্তানদের মধ্য হতে একটি সন্তানের হাতে এই মিসরের শাসন ক্ষমতা এই কওম হতে খতম হয়ে যাবে এবং এর বাদশাহ তার সামনে অতি লাঞ্ছিতভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।” বানী ইসরাঈলের মধ্যে এ রিওয়াইয়াতটি চলে আসছিল এবং তাদের পাঠ্যের মধ্যেও এটা ছিল বলে ফিরাউনের কওম কিবতীরাও এটা শুনেছিল। সুতরাং তারা এটা ফিরাউনের কানে পৌছিয়ে দিয়েছিল। তাই ফিরাউন এই আইন জারী করে দিলো যে, বানী ইসরাঈলের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করে দেয়া হবে ও কন্যা সন্তানদেরকে জীবিত রাখা হবে। এতো বড় অত্যাচারমূলক কাজ করতে সে মোটেই দ্বিধাবোধ করলো না। কিন্তু মহামহিমান্বিত ও প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তাই হয়ে থাকে। হযরত মূসা (আঃ) জীবিত রয়ে গেলেন এবং আল্লাহ তা'আলা ঐ উদ্ধত কওমকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করতঃ ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। সুতরাং সমুদয় প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে। এ জন্যেই তো আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আারবি)(আারবি) হতে (আারবি) পযন্ত। অর্থ্যৎ“আমি ইচ্ছা করলাম, সে দেশে যাদেরকে হীনবল করা হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে, তাদেরকে নেতৃত্ব দান করতে ও দেশের অধিকারী করতে। আর তাদেরকে দেশের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে এবং ফিরাউন, হামান ও তাদের বাহিনীকে তা দেখিয়ে দিতে, যা তাদের নিকট তারা আকাক্ষা করতো। এটা প্রকাশমান কথা যে, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা পূর্ণ হয়েই থাকে। আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ (আারবি)অর্থাৎ “যে সম্প্রদায়কে দুর্বল গণ্য করা হতো তাদেরকে আমি আমার কল্যাণপ্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী করি, এবং বানী ইসরাঈল সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালকের শুভবাণী সত্যে পরিণত হলো, যেহেতু তারা ধৈর্যধারণ করেছিল; আর ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়ের শিল্প এবং যেসব প্রাসাদ তারা নির্মাণ করেছিল তা ধ্বংস করেছি।” (৭:১৩৭) মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ (আারবি) অর্থাৎ “এভাবেই আমি বানী ইসরাঈলকে ওর উত্তরাধিকারী বানিয়েছি।” (২৬:৫৯)। ফিরাউন তার সর্বশক্তি প্রকাশ করেছিল, কিন্তু আল্লাহর শক্তি সে অনুমানও করতে পারেনি। শেষে আল্লাহর ইচ্ছাই পূর্ণ হয় এবং যে শিশুর কারণে সে হাজার হাজার নিস্পাপ শিশুর রক্ত প্রবাহিত করেছিল তাঁকেই তিনি তারই ক্রোড়ে লালন-পালন করিয়ে নেন, আর তারই হাতে তিনি তাকে ও তার লোক-লস্করকে ধ্বংস করিয়ে দেন, যাতে সে জেনে ও বুঝে নেয় যে, সে আল্লাহ তাআলার এক লাঞ্ছিত ও অসহায় দাস ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাবার ক্ষমতা কারো নেই। হযরত মূসা (আঃ)-কে ও তাঁর কওমকে আল্লাহ তা'আলা মিসরের রাজত্ব দান করলেন এবং ফিরাউন যাকে ভয় করছিল তিনিই সামনে এসে গেলেন এবং সে ধ্বংস হয়ে গেল। সুতরাং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে।