তাকে বলা হল, ‘এ প্রাসাদে প্রবেশ কর।’ যখন সে ওর প্রতি দৃষ্টিপাত করল, তখন তার মনে হল এ এক স্বচ্ছ জলাশয় এবং সে তার কাপড় টেনে হাঁটু পর্যন্ত তুলে ধরল।[১] (সুলাইমান) বলল, ‘এ তো স্বচ্ছ স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদ।’ (বিলকীস) বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমি নিজের প্রতি যুলুম করেছিলাম, (এখন) আমি সুলাইমানের সাথে বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম (মুসলমান হলাম)।’ [২]
[১] এই প্রাসাদটি ছিল কাঁচের। যার মেঝেও ছিল কাঁচের। لُجَّة গভীর পানি অথবা হওয। সুলাইমান (আঃ) নিজ নবুঅতের মু'জিযা (অলৌকিক ঘটনা) দেখানোর পর পার্থিব শান-শওকতের কিছু নমুনা দেখানো উচিৎ মনে করলেন, যা মানব ইতিহাসে বিশেষ করে তাঁকে আল্লাহ দান করেছিলেন। অতঃপর সেই প্রাসাদে প্রবেশের আদেশ দেওয়া হল। যখন তিনি প্রবেশ হতে লাগলেন তখন পায়ের লেবাস একটু উপরে তুলে নিলেন। (যাতে তাঁর পদনালী বের হয়ে গেল।) স্বচ্ছ কাঁচের মেঝে তাঁর নিকট পানি বলে মনে হল। তাই ভিজে যাওয়ার আশঙ্কায় কাপড় কিছুটা গুটিয়ে পায়ের রলার উপর তুলে নিলেন।
[২] অর্থাৎ, যখন মেঝের বাস্তবিকতা জানতে পারলেন, তখন নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। অতঃপর নিজের ভুল-ত্রুটি অনুভব ও স্বীকার করে মুসলমান হওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। স্বচ্ছ পরিষ্কার খোদাই করা পাথরকে مُمَرَّد (স্ফটিক) বলা হয়। এখান হতেই أمرَد শব্দ এমন সুদর্শন কিশোরের জন্য ব্যবহার হয় যার (মসৃণ গালে) দাড়ি-মোছ এখনও বের হয়নি। যে গাছের পাতা সম্পূর্ণ ঝড়ে গেছে তাকে شجرة مرداء বলা হয়। (ফাতহুল কাদীর) কিন্তু এখানে নির্মাণ বা জুড়ে দেওয়ার (গিল্টি করা) অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অর্থ স্ফটিক নির্মিত বা কাঁচের গিল্টি করা প্রাসাদ।
নোটঃ রাণী বিলকীস মুসলমান হবার পর তাঁর কি হল? কুরআন বা সহীহ হাদীসে এর কোন বিস্তারিত আলোচনা নেই। অবশ্য তাফসীরের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, সুলাইমান (আঃ)-এর সাথে তাঁর বিবাহ হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু কুরআন ও হাদীস এ ব্যাপারে নিশ্চুপ, সেহেতু আমাদেরও চুপ থাকাটাই শ্রেয়। والله أعلم بالصواب