You are reading a tafsir for the group of verses 27:38 to 27:40
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৩৮-৪০ নং আয়াতের তাফসীরযখন দূতেরা বিলকীসের নিকট ফিরে আসে এবং পুনরায় তার কাছে নবুওয়াতের পয়গাম পৌছে তখন সে নিশ্চিতরূপে বুঝতে পারে যে, হযরত সুলাইমান (আঃ) একজন নবী। তাই সে বলে- “আল্লাহর শপথ! তিনি একজন নবী এবং নবীদের সঙ্গে কখনো মুকাবিলা করা যায় না।” তৎক্ষণাৎ সে পুনরায় দূত পাঠিয়ে বললোঃ “আমি আমার কওমের নেতৃস্থানীয় লোকজনসহ আপনার দরবারে হাযির হচ্ছি, যাতে স্বয়ং আপনার সাথে মিলিত হয়ে দ্বীনী জ্ঞান লাভ করতে পারি এবং আপনার কাছে সান্ত্বনা পেতে পারি।” একথা বলে পাঠিয়ে একজনকে এখানে নিজের প্রতিনিধি বানিয়ে দিলো এবং তার দায়িত্বে সাম্রাজ্যের ব্যবস্থাপনার ভার দিয়ে নিজের মণি-মাণিক্য খচিত স্বর্ণের মহামূল্যবান সিংহাসনটি সাতখণ্ড করে সাতটি প্রাসাদে তালাবদ্ধ করে রাখলো এবং প্রতিনিধিকে এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে বিশেষভাবে নির্দেশ দিলো। অতঃপর বারো হাজার নেতৃস্থানীয় লোককে সঙ্গে নিয়ে হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর রাজ্যাভিমুখে যাত্রা শুরু করলো। ঐ বারো হাজার নেতৃস্থানীয় লোকের প্রত্যেকের অধীনে আবার হাজার হাজার লোক ছিল। জ্বিনেরা বিলকীস ও তার লোকজনের প্রতিক্ষণের খবর হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর নিকট পৌঁছিয়ে দিচ্ছিল। তিনি যখন জানতে পারলেন যে, তারা নিকটবর্তী হয়ে গেছে তখন তিনি তাঁর রাজসভায় বিদ্যমান মানব ও দানবকে লক্ষ্য করে বললেনঃ “বিলকীস ও তার লোক-লশূকর এখানে পৌঁছে যাওয়ার পূর্বেই তার সিংহাসনটি আমার নিকট হাযির করে দিতে পারে এরূপ কেউ তোমাদের মধ্যে আছে কি? কেননা, যখন সে এখানে এসে পড়বে এবং ইসলাম কবুল করে নিবে তখন তার ধন-সম্পদ আমাদের জন্যে হারাম হয়ে যাবে। তার একথা শুনে একজন শক্তিশালী উদ্ধত জ্বিন, যার নাম ছিল কাওযান এবং সে ছিল একটা বিরাট পাহাড়ের মত, বললোঃ “আপনার দরবার ভেঙ্গে দেয়ার পূর্বেই আমি ওটা আপনাকে এনে দিতে পারি।” হযরত সুলাইমান (আঃ) জনগণের বিচার মীমাংসার জন্যে সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত সাধারণ দরবারে বসতেন। কাওযান নামক জ্বিনটি বললোঃ “এই সময়ের মধ্যেই আমি বিলকীসের সিংহাসনটি আপনার নিকট নিয়ে আসতে সক্ষম। অরি আমি আমানতদারও বটে। ওর থেকে কোন জিনিস আমি চুরি করবো না।” হযরত সুলাইমান (আঃ) বললেনঃ “আমি চাই যে, এরও পূর্বে যেন তার সিংহাসনটি আমার নিকট পৌছে যায়। এর দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, হযরত সুলাইমান ইবনে দাউদ (আঃ)-এর ঐ সিংহাসনটি আনিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাঁর একটি বড় মু'জিযা ও পূর্ণ শক্তির প্রমাণ বিলকীসকে প্রদর্শন করা। কাতাদা (রঃ) যে উদ্দেশ্যের কথা বর্ণনা করেছেন তা সঠিক ।হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর এই ত্বরা ও পীড়াপীড়িপূর্ণ নির্দেশ শুনে যার নিকট কিতাবী জ্ঞান ছিল, এক উক্তি অনুযায়ী, তিনি ছিলেন আসেফ, তিনি হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর লেখক ছিলেন। তাঁর পিতার নাম ছিল বারখায়া। তিনি একজন আল্লাহর ওলী ছিলেন। তিনি ইসমে আযম জানতেন। তিনি ছিলেন একজন পাকা মুসলমান। আবু সালেহ (রঃ), যহহাক (রঃ) এবং কাতাদা (রঃ) বলেন যে, তিনি মানবের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কাতাদা (রঃ) আরো বাড়িয়ে বলেছেন। যে, তিনি বানী ইসরাঈলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, তাঁর নাম ছিল উসতুম। একটি রিওয়াইয়াতে তার নাম বালীখও রয়েছে। যুহায়ের ইবনে মুহাম্মাদ (রঃ) বলেন যে, তিনি একজন মানুষ ছিলেন এবং তাঁকে মুননূর বলা হতো। আবদুল্লাহ ইবনে লাহীআহ (রঃ)-এর উক্তি এই যে, তিনি ছিলেন হযরত খিয়র (আঃ)। কিন্তু এই উক্তিটি খুবই গরীব বা দুর্বল। যাই হোক, তিনি বললেনঃ “আপনি চক্ষুর পলক ফেলবার পূর্বেই আমি সিংহাসনটি আপনাকে এনে দিবো।” সুতরাং হযরত সুলাইমান (আঃ) ইয়ামনের দিকে তাকালেন যেখানে বিলকীসের সিংহাসনটি ছিল। এদিকে যে লোকটির কিতাবের জ্ঞান ছিল তিনি অযু করে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং দু'আ করতে শুরু করলেন। তিনি দু'আয় বললেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে মহিমময়, মহানুভব!" অথবা বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে আমার মা'বূদ ও প্রত্যেক জিনিসের মা’বৃদ, একক মাবুদ! আপনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, আপনি তার আরশটি এনে দিন।” তৎক্ষণাৎ বিলকীসের সিংহাসনটি সামনে এসে পড়লো। এটুকু সময়ের মধ্যে ওটা ইয়ামন হতে বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছে গেল এবং সুলাইমান (আঃ)-এর সৈন্যদের চোখের সামনে দিয়ে ওটা তার কাছে এসে গেল। যখন তিনি ওটা সম্মুখে রক্ষিত অবস্থায় দেখলেন তখন বললেনঃ “এটা আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ ছাড়া কিছুই নয়, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, আমি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞ হই? যে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তা করে নিজের কল্যাণের জন্যেই এবং যে অকৃতজ্ঞ হয় তার জেনে রাখা উচিত যে, আমার প্রতিপালক অভাবমুক্ত ও মহানুভব।” যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি)অর্থাৎ “যে ভাল কাজ করে সে তা নিজের কল্যাণের জন্যেই করে এবং যে মন্দ কাজ করে, ওর ফল তাকেই ভোগ করতে হবে।”(৪১:৪৬) আর এক জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “যারা ভাল কাজ করছে তারা নিজেদের জন্যেই কল্যাণ জমা করছে।” (৩০:৪৪) হযরত মূসা (আঃ) তাঁর কওমকে বলেছিলেন ?অর্থাৎ “যদি তোমরা এবং ভূ-পৃষ্ঠের সবাই কুফরী করতে শুরু কর তবে জেনে রেখো যে, (এতে তোমরা আল্লাহর একটুও ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ) আল্লাহ তা'আলা অভাবমুক্ত এবং প্রশংসিত।” (১৪: ৮)সহীহ মুসলিমে আছে যে, আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের এবং তোমাদের মানব ও দানব সবাই আল্লাহভীরু ও সৎ হয়ে যায় তবুও আমার রাজত্ব ও মান-মর্যাদা একটুও বৃদ্ধি পাবে না। পক্ষান্তরে যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব সবাই পাপী ও অবাধ্য হয়ে যায় তবুও আমার আধিপত্য ও মান-মর্যাদা একটুও হ্রাস পাবে না। এগুলো তো তোমাদের আমল মাত্র, যেগুলো জমা হবে এবং তোমরা লাভ করবে। সুতরাং তোমাদের কেউ কল্যাণ পেলে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে, আর কোন অকল্যাণ ও অনিষ্ট পেলে যেন সে নিজেকেই তিরস্কার করে।”