You are reading a tafsir for the group of verses 27:7 to 27:14
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৭-১৪ নং আয়াতের তাফসীরআল্লাহ তা'আলা স্বীয় প্রিয় পাত্র হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-কে হযরত মূসা (আঃ)-এর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তিনি হযরত মূসা (আঃ)-কে মর্যাদাসম্পন্ন নবী বানিয়েছিলেন, তার সাথে কথা বলেছিলেন, তাঁকে বড় বড় মু'জিযা দান করেছিলেন এবং ফিরাউন ও তার লোকদের কাছে তাঁকে নবীরূপে প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু ঐ কাফিরের দল তাকে অস্বীকার করে। তারা কুফরী ও অহংকার করে এবং তাঁর অনুসরণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।মহান আল্লাহ বলেন যে, যখন হযরত মূসা (আঃ) নিজের পরিবারবর্গকে নিয়ে চলছিলেন তখন তিনি পথ ভুলে যান। রাত্রি এসে পড়ে এবং চতুর্দিক ঘন অন্ধকারে ছেয়ে যায়। একদিকে তিনি অগ্নিশিখা দেখতে পান। তখন তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে বলেনঃ “তোমরা এখানে অবস্থান কর। আমি ঐ আলোর দিকে যাচ্ছি। হয়তো সেখানে কেউ রয়েছে, তার কাছে পথ জেনে নেবো, অথবা সেখান হতে কিছু আগুন নিয়ে আসবো। যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার। হলোও তাই। সেখান হতে তিনি একটি বড় খবর আনলেন এবং বড় একটা নূর (জ্যোতি) লাভ করলেন। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, যখন হযরত মূসা (আঃ) ঐ আলোর নিকট পৌঁছলেন তখন তিনি সেখানকার দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গেলেন। তিনি একটি সবুজ রং গাছ দেখলেন যার উপর আগুন জড়িয়ে রয়েছে। অগ্নিশিখা প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে এবং গাছের শ্যামলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপরের দিকে তাকিয়ে তিনি দেখতে পান যে, ঐ নূর আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। প্রকৃতপক্ষে ওটা আগুন ছিল না। বরং জ্যোতি ছিল। সেটা আবার ছিল বিশ্বপ্রতিপালক এক ও শরীকবিহীন আল্লাহর। হযরত মূসা (আঃ) অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছিলেন এবং তিনি কোন কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। হঠাৎ শব্দ আসলোঃ ধন্য সে ব্যক্তি যে আছে এই অগ্নির মধ্যে এবং যারা আছে ওর চতুষ্পর্শ্বে (অর্থাৎ ফেরেশতামণ্ডলী)।হযরত আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ নিদ্রা যান না এটা তার জন্যে উপযুক্ত নয়। তিনি দাঁড়িপাল্লাকে নীচে নামিয়ে দেন এবং উঁচু করে থাকেন। রাত্রির কাজ দিনের পূর্বেই এবং দিনের কাজ রাত্রির পূর্বেই তাঁর নিকট উঠে যায়। (এ হাদীসটি মুসনাদে আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে) “তার পর্দা হলো জ্যোতি অথবা অগ্নি। যদি ওটা সরে যায় তবে তার চেহারার তাজাল্লীতে ঐ সমুদয় জিনিস পুড়ে যাবে যেগুলোর উপর তাঁর দৃষ্টি পড়বে (অর্থাৎ সারা জগত)।" এটুকু মাসঊদী (রঃ) বেশী করেছেন। এ হাদীসের বর্ণনাকারী আবু উবাইদাহ (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করার(আরবি) এ আয়াতটিই পাঠ করেন। জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত। তিনি যা চান তা-ই করে থাকেন। তাঁর সৃষ্টের মধ্যে তাঁর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কেউই নেই। তিনি সমুচ্চ ও মহান। তিনি সমুদয় সৃষ্ট হতে পৃথক। যমীন ও আসমান তাকে পরিবেষ্টন করতে পারে না। তিনি এক, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি মাখলুকের সঙ্গে তুলনীয় হওয়া হতে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র।এরপর আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, তিনি হযরত মূসা (আঃ)-কে সম্বোধন করে বলেনঃ হে মূসা (আঃ)! আমি তো আল্লাহ, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।অতঃপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ হযরত মূসা (আঃ)-কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ “হে মূসা (আঃ)! তুমি তোমার হাতের লাঠিখানা যমীনে ফেলে দাও যাতে তুমি স্বচক্ষে দেখতে পাও যে, আল্লাহ তাআলা স্বেচ্ছাচারী এবং তিনি সবকিছুর উপরই পূর্ণ ক্ষমতাবান।” আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ শ্রবণ মাত্রই হযরত মূসা (আঃ) তাঁর লাঠিখানা মাটিতে ফেলে দেন। তৎক্ষণাৎ লাঠিখানা এক বিরাট সাপ হয়ে যায় এবং চলতে ফিরতে শুরু করে। লাঠিকে এরূপ বিরাট জীবন্ত সাপ হতে দেখে হযরত মূসা (আঃ) ভীত হয়ে পড়েন। কুরআন কারীমে (আরবি) শব্দ রয়েছে, এটা হলো এক প্রকার সাপ যা অতি দ্রুত চলতে পারে এবং খুবই ভয়াবহ হয়ে থাকে। একটি হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঘরে অবস্থানকারী সাপকে মেরে ফেলতে নিষেধ করেছেন।মোটকথা, হযরত মূসা (আঃ) ঐ সাপ দেখে ভীত হয়ে পড়েন এবং ভয়ের কারণে স্থির থাকতে পারেননি, বরং পিঠ ফিরিয়ে সেখান হতে পালাতে শুরু করেন। তিনি এতো ভীত-সন্ত্রস্ত ছিলেন যে, একবার মুখ ঘুরিয়েও দেখেননি। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তা'আলা ডাক দিয়ে বললেনঃ “হে মূসা (আঃ)! ভীত হয়ো না। আমি তো তোমাকে আমার মনোনীত রাসূল ও মর্যাদা সম্পন্ন নবী বানাতে চাই। এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তবে যারা যুলুম করার পর মন্দকর্মের পরিবর্তে সৎ কর্ম করে তাদের প্রতি আমি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” এখানে হয়েছে। এই আয়াতে মানুষের জন্যে বড়ই সুসংবাদ রয়েছে। যে কেউই কোন অন্যায় ও মন্দ কাজ করবে, অতঃপর লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে ঐ কাজ ছেড়ে দেবে ও খাটি অন্তরে তাওবা করবে এবং আল্লাহর দিকে ঝুঁকে পড়বে, আল্লাহ তা'আলা তার তাওবা ককূল করে নিবেন। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আমি ঐ ব্যক্তির উপর অত্যন্ত ক্ষমাশীল যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং ভাল কাজ করে অতঃপর হিদায়াত লাভ করে।” (২০:৮২) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করে অথবা নিজের নফসের উপর যুলুম করে।” (৪:১১০) এই বিষয়ের আয়াত বহু রয়েছে।লাঠি সাপ হয়ে যাওয়া একটি মুজিযা, এর সাথে সাথে হযরত মূসা (আঃ)-কে আর একটি মু'জিযা দেয়া হচ্ছে। আল্লাহ তা'আলা তাঁর প্রিয় নবী হযরত মূসা (আঃ)-কে সম্বোধন করে বলেনঃ তোমার হাত তোমার বক্ষপার্শ্বে বস্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করাও, তাহলে এটা বের হয়ে আসবে শুভ্র নির্দোষ হয়ে। এটা ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়ের নিকট আনীত নয়টি নিদর্শনের অন্তর্গত, যেগুলো দ্বারা আমি সময়ে সময়ে তোমার পৃষ্ঠপোষকতা করবো, যাতে তুমি সত্যত্যাগী ফিরাউন ও তার কওমের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পার ।এ নয়টি মু'জিয়া এগুলোই ছিল যেগুলোর বর্ণনা, (আরবি) (১৭: ১০১) এই আয়াতে রয়েছে যার পূর্ণ তাফসীর ওখানেই গত হয়েছে।যখন এই সুস্পষ্ট ও প্রকাশমান মু'জিযাগুলো ফিরাউন ও তার লোকদেরকে দেখানো হলো তখন তারা হঠকারিতা করে বললোঃ “এটা তো সুস্পষ্ট যাদু। আমরা তোমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাবার জন্যে আমাদের বড় বড় যাদুকরদেরকে আহ্বান করছি। যাদুকরদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলো। আল্লাহ তা'আলা সত্যকে জয়যুক্ত করলেন এবং ঐ হঠকারিদের সবকিছুই ব্যর্থ হয়ে গেল। তবুও তারা। বাহ্যিক মুকাবিলা হতে সরলো না। শুধু যুলুম ও ফখরের উপর ভিত্তি করেই তারা সত্যকে অবিশ্বাস করতে থাকলো। মহান আল্লাহ বলেনঃ দেখো, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কতই না। বিস্ময়কর ও শিক্ষামূলক হয়েছিল। একই বারে একই সাথে সবাই তারা সমদে নিমজ্জিত হয়েছিল। সুতরাং হে শেষ নবী (সঃ)-কে অবিশ্বাসকারীর দল! তোমরা এই নবী (সঃ)-কে অবিশ্বাস করে নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করে বসো না। কেননা, এই নবী (সঃ) তো হযরত মূসা (আঃ) অপেক্ষাও উত্তম ও শ্রেষ্ঠতর। তার দলীল প্রমাণাদি ও মু'জিযাগুলোও হযরত মূসা (আঃ)-এর মু'জিযাগুলো অপেক্ষা বড় এবং মযবূত। স্বয়ং তাঁর ঐ অস্তিত্ব, তাঁর স্বভাব চরিত্র, পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের এবং পূর্ববর্তী নবীদের (আঃ) তাঁর সম্পর্কে শুভ সংবাদ ও তাঁদের নিকট হতে তার জন্য আল্লাহ তা'আলার ওয়াদা অঙ্গীকার গ্রহণ ইত্যাদি সবকিছুই তার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং তোমরা তাঁকে না মেনে নির্ভয়ে থাকবে এটা মোটেই উচিত নয়।

Maximize your Quran.com experience!
Start your tour now:

0%