মূসা বললেন, ‘দূর হও! তোমার জীবদ্দশায় তোমার জন্য এটিই থাকল যে, তুমি বলবে ‘‘আমি অস্পৃশ্য’’[১] এবং তোমার জন্য থাকল এক নির্দিষ্টকাল যার ব্যতিক্রম হবে না।[২] আর তুমি তোমার সেই উপাস্যের প্রতি লক্ষ্য কর, যার পূজায় তুমি রত ছিলে, আমরা অবশ্যই ওকে জ্বালিয়ে দেব অতঃপর ওকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে সাগরে নিক্ষেপ করব। [৩]
[১] অর্থাৎ, তুমি সারা জীবন এটি বলতে থাকবে যে, আমার নিকট হতে দূরে থাকো, আমাকে স্পর্শ করো না বা ছুঁয়ো না। কারণ তাকে স্পর্শ করার সাথে সাথে (সামেরী ও স্পর্শকারী) উভয়েই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ত। সেই কারণে যখনই সে কোন মানুষকে দেখত, তখনই হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠত, 'আমাকে ছুঁয়ো না।' কথিত আছে যে, পরবর্তীতে সে মানুষের বসতি এলাকা ছেড়ে জঙ্গলে চলে যায়। সেখানে জীব-জন্তুদের সাথে তার জীবন অতিবাহিত হয় এবং সে মানুষের জন্য শিক্ষার এক নমুনা হয়ে যায়। অর্থাৎ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য যে যত বেশী বাহানা, ছল-চাতুরি ও ধোঁকাবাজি করবে দুনিয়া ও আখেরাতে তার শাস্তিও সেই হিসাবে তত বেশী কঠিন ও শিক্ষণীয় হবে।
[২] অর্থাৎ, আখেরাতের শাস্তি এর ভিন্ন অতিরিক্ত; যা তাকে অবশ্য-অবশ্যই ভোগ করতে হবে।
[৩] এখান হতে বুঝা গেল যে, শিরকের চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া; বরং তার নাম-নিশান ও অস্তিত্ব মিটিয়ে ফেলা দরকার, চাহে তার সম্পর্ক যত বড়ই ব্যক্তিত্বের সাথে হোক না কেন। আর এটা তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা ও অপমান নয়; যেমন বিদআতী, কবর ও তাজিয়া পূজারীরা মনে করে থাকে, বরং এটি তাওহীদের উদ্দেশ্য ও ধর্মীয় আত্মচেতনাবোধের দাবী। যেমন এই ঘটনায় 'দূত (জিবরীল)এর পদচিহ্ন'-এর মাহাত্ম্য খেয়াল করা হয়নি; যাতে বাহ্য-দৃষ্টিতে আধ্যাত্মিক বরকত দৃষ্টিগোচর হয়েছিল। বরং তা সত্ত্বেও তার পরোয়া করা হয়নি। কারণ তা শিরকের মাধ্যম ও অসীলা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।