৮০-৮২ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা বানী ইসরাঈলের উপর যে বড় বড় ইহান করেছিলেন তাই তিনি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। ওগুলির মধ্যে একটি এই যে, তাদেরকে তিনি তাদের শত্রুদের কবল হতে মুক্তি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বরং তিনি তাদের শত্রুদেরকে তাদের চোখের সামনে সমুদ্রে নিমজ্জিত করেছেন। তাদের একজনও রক্ষা পায় নাই। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তোমাদের চোখের সামনে ফিরাউনীদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।" (২:৫০)সহীহ্ বুখারীতে রয়েছে যে, মদীনার ইয়াহুদীদেরকে আশূরার দিন (১০ই মহররম) রোযা রাখতে দেখে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদের এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। তারা উত্তরে বলেঃ “এই দিনেই আল্লাহ তাআলা হযরত মূসাকে (আঃ) ফিরাউনের উপর বিজয় দান করেছিলেন। তখন তিনি বলেনঃ “তোমাদের তুলনায় হযরত মূসা (আঃ) তো আমাদেরই বেশী নিকটে।” অতঃপর তিনি মুসলমানদেরকে ঐদিন রোযা রাখার নির্দেশ দেন।আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহকে (আঃ) তূর পাহাড়ের দক্ষিণ পার্শ্বের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি সেখানে গমন করেন। আর। এদিকে তার অনুপস্থিতির সুযোগে বনী ইসরাঈল গো-বৎসের পূজা শুরু করে দেয়। এর বর্ণনা সত্বরই সামনে আসছে ইনশা আল্লাহ! অনুরূপভাবে আল্লাহ বানী ইসরাঈলের উপর আর একটি অনুগ্রহ এই করেন যে, তাদের আহার্য হিসেবে তাদেরকে মান্না’ ও ‘সালওয়া দান করেন। সূরায়ে বাকারা প্রভৃতির তাফসীরে এর পূর্ণ বর্ণনা গত হয়েছে। মান্না ছিল এক প্রকার মিষ্ট জিনিস, যা তাদের জন্যে আকাশ হতে অবতীর্ণ হতো। আর সালওয়া ছিল এক প্রকারের পাখী, যা আল্লাহর হুকুমে তাদের সামনে এসে পড়তো। ওগুলি হতে তারা। একদিনের খাদ্য পরিমাণে গ্রহণ করতো।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ আমার প্রদত্ত এই আহার্য হতে ভাল ভাল বস্তু তোমরা আহার কর, কিন্তু সীমালংঘন করো না। বিনা প্রয়োজনে বা। হারাম পন্থায় তা গ্রহণ করো না। অন্যথায় আমার ক্রোধ অবতারিত হবে। আর যার উপর আমার ক্রোধ অবতারিত হয়, বিশ্বাস রেখো যে, সে বড়ই হতভাগ্য।হযরত শাফী ইবনু মা’নে (রঃ) বলেন যে, জাহান্নামের মধ্যে একটি উঁচু জায়গা নির্মিত আছে, যেখান হতে কাফিরদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। জিঞ্জীর রাখার জায়গায় পর্যন্ত পৌঁছতে তার চল্লিশ বছর সময় লাগে। এই আয়াতের অর্থ এটাই যে, সে গর্তে পড়ে গেল।মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার উপর যে তাওবা করে,ঈমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচলিত থাকে। বানী ইসরাঈলের মধ্যে যারা গো-বৎসের পূজা করেছিল, তাদের তাওবার পর আল্লাহ তাআলা তাদেরকেও ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। মোট কথা, কেউ যদি কুফরী, শিরক, পাপকার্য এবং নাফরমানী করার পর আল্লাহর ভয়ে তা পরিত্যাগ করে তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে থাকেন। তবে অন্তরে বিশ্বাস রাখা এবং সৎ আমল করা অপরিহার্য কর্তব্য। আর থাকতে হবে সৎপথে এবং কোন সন্দেহ পোষণ করতে হবে না। সুন্নাতে রাসূল (সঃ) এবং সাহাবীদের (রাঃ) রীতি নীতির অনুসরণ করতে হবে এবং এতে সওয়াবের আশা রাখতে হবে।এখানে (আরবী) শব্দটি খবরের (বিধেয়ের) উপর বিন্যস্ত করার জন্যে আনয়ন করা হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেছেনঃ (আরবী)