৫৩-৫৬ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত মূসা (আঃ) ফিরাউনের প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ তাআলার গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে আরো বলেনঃ ঐ আল্লাহই যমীনকে লোকদের জন্যে বিছানা বানিয়েছেন। (আরবী) শব্দটি অন্য কিরআতে (আরবী) ও রয়েছে ।মহান আল্লাহ যমীনকে বিছানারূপে বানিয়ে দিয়েছেন, যেন তোমরা তার উপর স্থির থাকতে পারো এবং ওরই উপর শুইতে, বসতে ও চলা ফেরা করতে পারো। তিনি যমীনে তোমাদের চলা ফেরা ও সফর করার জন্যে পথ বানিয়ে দিয়েছেন, যাতে তোমরা পথ ভুলে না যাও এবং সহজেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারো। তিনিই আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করে থাকেন এবং এর মাধ্যমে যমীন হতে বিভিন্ন প্রকারের ফসল উৎপন্ন করেন। তোমরা তা নিজেরা খেয়ে থাকো এবং তোমাদের গবাদি পশু গুলিকেও আহার করিয়ে থাকো। তোমাদের খাদ্য, ফল-ফলাদি এবং তোমাদের জীব জন্তুর চারা-ভূষি শুষ্ক ও সিক্ত সবকিছুই এই বৃষ্টির মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা উৎপন্ন করে থাকেন। এই সব নিদর্শন দলীল হচ্ছে আল্লাহর আল্লাহ হওয়ার এবং তার একত্ব ও অস্তিত্বের উপর।মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তোমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছি। এর থেকেই তোমাদের সূচনা। কেননা, তোমাদের পিতা আদমের (আঃ) সৃষ্টি এই মাটি থেকেই। এর মধ্যেই তোমাদেরকে আবার ফিরে যেতে হবে। মৃত্যুর পর তোমাদেরকে এর মধ্যেই দাফন করা হবে। অতঃপর আমি এটা হতেই পুনর্বার তোমাদেরকে বের করবো। আমার আহবানে সাড়া দিয়ে আমার প্রশংসা করতে করতে তোমরা উঠবে এবং বিশ্বাস করে নিবে যে, তোমরা খুব অল্প দিনই দুনিয়ায় অবস্থান করেছে। অন্য আয়াতে আছেঃ “এই যমীনেই তোমাদের জীবন অতিবাহিত হবে, মৃত্যুর পরেও তোমরা এর মধ্যেই যাবে এবং এর মধ্য হতেই তোমরা পুনরুত্থিত হবে।” সূনানের হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এক মৃত ব্যক্তির দাফনের পরে তার কবরে মাটি দেয়ার সময় প্রথমবার (আরবী) বলেন, দ্বিতীয় বার (আরবী) বলেনঃ এবং তৃতীয়বার (আরবী) বলেন। মোট কথা, ফিরাউনের সামনে সমস্ত দলীল প্রমাণ এসে যায়। সে মু'জিযা ও নিদর্শনসমূহ স্বচক্ষে দেখে নেয় কিন্তু সবকিছুই সে অস্বীকার করে। এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করতেই থাকে। সে কুফরী, ঔদ্ধত্যপনা, হঠকারিতা, এবং অহংকার হতে বিরত থাকে নাই। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তাদের অন্তর ওটা বিশ্বাস করে নেয়া সত্ত্বেও তারা যুলুম, বাড়াবাড়ি ও অস্বীকার করা হতে বিরত থাকলো না।” (২৭:১৪)