৪৯-৫২ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকারকারী ফিরাউন হযরত মূসার (আঃ) মুখে আল্লাহ্ব পয়গাম শুনে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করন হিসেবে তাঁকে প্রশ্ন করেঃ “তোমাকে প্রেরণকারী ও তোমার প্রতিপালক কে? আমি তো তাকে জানি না, বুঝি না এবং মানি না। বরং আমার জ্ঞানে তো তোমাদের সবারই প্রতিপালক আমি ছাড়া আর কেউ নয়। তার এ কথার জবাবে আল্লাহর রাসূল হযরত মূসা (আঃ) তাকে বলেনঃ “আমার প্রতিপালক তিনিই যিনি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার জোড়া দান করেছেন। যিনি মানুষকে মানুষের আকারে, গাধাকে গাধার আকারে, বকরীকে বকরীর আকারে, এভাবে প্রত্যেক প্রাণীকে পৃথক পৃথক আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন ।প্রত্যেককেওর বিশিষ্ট আকার দান করেছেন। প্রত্যেকের সৃষ্টি পৃথক গুণ বিশিষ্টরূপে সৃষ্টি করেছেন। মানব সৃষ্টির পন্থা আলাদা, চতুষ্পদ জন্তুর সৃষ্টির নিয়ম পৃথক এবং হিংস্র জন্তুর গঠন রীতি পৃথক। প্রত্যেকের জোড়ার গঠন-কৌশল স্বতন্ত্র। খাদ্য ও পানীয় এবং পানাহারের জিনিসগুলি সব পৃথক পৃথক। সবকিছুর পরিমাণ নির্ধারণ করে গঠনরীতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। আমল, আযল এবং রিযক নির্ধারণ করে তারই উপর লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। সমস্ত মাখলুকের কারখানা সুশৃংখলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কেউই এগুলোকে এধার ওধার করতে পারে না। সৃষ্টির স্রষ্টা, তকদীর, নির্ধারণকারী এবং ইচ্ছামত সৃষ্টজীব সৃষ্টিকারীই হলেন আমার প্রতিপালক।" এ সব শুনে ঐ নির্বোধ আবার প্রশ্ন করলোঃ “আচ্ছা, যারা আমাদের পূর্বে গত হয়েছে এবং আল্লাহর ইবাদত অস্বীকার করেছে তাদের অবস্থা কি?" এই প্রশ্নটি সে খুব গুরুত্বের সাথে করলো। কিন্তু হযরত মূসা (আঃ) এমনভাবে এর উত্তর দিলেন যে, সে হতবাক হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ “তাদের সবারই জ্ঞান আমার প্রতিপালকের রয়েছে। তিনি লাওহে মাহফুজে তাদের আমল সমূহ লিখে রেখেছেন। পুরস্কার প্রদান ও শাস্তি দেয়ার দিন নির্ধারিত রয়েছে। তিনি ভুল করবেন না এবং ছোট বড় কেউই তার পাকড়াও হতে ছুটতে পারবে না। এমন নয় যে, ভুলে কোন অপরাধী তার শাস্তি হতে মুক্তি পেয়ে যাবে। তার জ্ঞান সবকিছুকেই পরিবেষ্টন করে রয়েছে। তাঁর পবিত্র সত্ত্বা ভুল ভ্রান্তি হতে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত। কোন কিছুই তাঁর জ্ঞান বহির্ভূত নয়। জানার পরে ভুলে যাওয়া তাঁর বিশেষণ নয়। তিনি জ্ঞানের স্বল্পতা ও ভুলে যাওয়ার ক্রটি হতে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র।
0%