You are reading a tafsir for the group of verses 20:45 to 20:48
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৪৫-৪৮ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহর দু'জন নবী (আঃ) তার আশ্রয় প্রার্থনা করতঃ নিজেদের দুর্বলতার কথা তাঁর সামনে পেশ করছেন। তাঁরা বলেনঃ হে আমাদের প্রতিপালক। আমাদের ভয় হচ্ছে যে, না জানি ফিরাউন হয়তো আমাদের উপর জুলুম করবে, আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করবে, আমাদের মুখবন্ধ করার জন্যে তাড়াতাড়ি আমাদেরকে কোন বিপদে জড়িয়ে ফেলবে এবং আমাদের প্রতি অবিচার করবে। তাদের একথার জবাবে মহান আল্লাহ তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেনঃ তাকে তোমরা মোটেই ভয় করবে না। আমি স্বয়ং তোমাদের সাথে রয়েছি। আমি তোমাদের ও তার কথাবার্তা শুনতে থাকবে এবং তোমাদের কোন কিছুই আমার কাছে গোপন থাকতে পারে না। তার চুলের ঝুঁটি আমার হাতে রয়েছে। সে আমার অনুমতি ছাড়া নিঃশ্বাসও গ্রহণ করতে পারে না। সে কখনো আমার আয়ত্বের বাইরে যেতে পারে না। আমার হিফাযত ও সাহায্য সহযোগিতা সদা তোমাদের সাথে থাকবে।হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন যে, হযরত মূসা (আঃ) মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেনঃ হে আমার প্রতিপালক! ফিরাউনের কাছে যাওয়ার সময় যা পাঠ করবো তা আমাকে শিখিয়ে দিন!" তখন আল্লাহ তাআলা তাকে নিম্নের দুআটি শিখিয়ে দেনঃ (আরবী) যার আরবী অর্থ হচ্ছেঃ (আরবী) অর্থাৎ সব কিছুর পূর্বেও আমি জীবিত এবং সব কিছুর পরেও আমি জীবিত।” এরপর ফিরাউনের কাছে গিয়ে কি বলতে হবে তা আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শিখিয়ে দেন। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ তারা গিয়ে ফিরাউনের দরযার উপর দাড়িয়ে যান। অতঃপর তারা তার নিকট প্রবেশের অনুমতি চান। বহু বিলম্বে তাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়।মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক (রঃ) বলেন যে, তারা দু'জন দু'বছর পর্যন্ত প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় ফিরাউনের কাছে যেতেন। দারোয়ানদেরকে বলতেন যে, তারা যেন তাদের আগমন সংবাদ ফিরাউনকে জানিয়ে দেয়। কিন্তু ফিরাউনের ভয়ে কেউ তাকে সংবাদ দেয় নাই। দু'বছর পর একদা ফিরাউনের এক অন্তরঙ্গ বন্ধু, যে বাদশাহর সাথে কৌতুকও করতো, তাকে বলেঃ “আপনার দরার উপর একটি লোক দাড়িয়ে আছে এবং এক বিস্ময়কর মজার কথা বলছে। সে। বলছে যে, আপনি ছাড়া নাকি তার অন্য এক মাবুদ রয়েছেন যিনি তাকে। রাসূল করে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। ফিরাউন জিজ্ঞেস করেঃ “সে আমারই দরযার উপর দাড়িয়ে রয়েছে?” তার বন্ধু উত্তরে বললোঃ “হ” ফিরাউন তাকে তার কাছে ডেকে আনার নির্দেশ দিলো। সুতরাং লোক গেল এবং দু’জন নবীকে (আঃ) ফিরাউনের দরবারে হাজির করলো। হযরত মূসা (আঃ) ফিরাউনকে লক্ষ্য করে বললেনঃ “আমি বিশ্ব প্রতিপালকের রাসূল।” ফিরাউন তাকে চিনতে পেরে বলে উঠলোঃ “ আরে, এ যে মূসা (আঃ)!”সুদ্দী (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, হযরত মূসা (আঃ) মিসরে তার নিজের বাড়ীতেই অবস্থান করেছিলেন। তাঁর মাতা ও ভাই তাঁকে প্রথমে চিনতে পারেন নাই। তাঁকে অতিথি মনে করে বাড়ীতে যা রান্না করা হয়েছিল তাই তাঁর সামনে হাজির করেন। পরে তারা তাকে চিনতে পারেন এবং সালাম দেন। হযরত মূসা (আঃ) তাঁর ভাইকে সম্বোধন করে বলেনঃ “হে হারূণ (আঃ)! আমার প্রতি আল্লাহ তাআলার নির্দেশ হয়েছে যে, আমি যেন বাদশাহ ফিরাউনকে আল্লাহর পথে আহ্বান করি। আর তোমার সম্পর্কে আমার উপর আল্লাহর নির্দেশ এই যে, তুমি আমার পৃষ্ঠপোষকতা করবে। তখন হযরত হারূণ (আঃ) তাকে বললেনঃ “তা হলে আল্লাহর নামে শুরু করে দিন।” রাত্রে তারা দু'ভাই ফিরাউনের কাছে গমন করেন। হযরত মূসা (আঃ) স্বীয় লাঠি দ্বারা দরযায় করাঘাত করেন। এ দেখে ফিরাউন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে এবং বলেঃ “কার এমন দুঃসাহস যে, দরবারের আদবের বিপরীত লাঠি দ্বারা আমাকে সতর্ক করছে?” দরবারের লোকেরা জবাবে বললোঃ “হে শাহানশাহ! “ তেমন কিছু নয়, একজন পাগল লোক বলতে রয়েছেঃ “আমি একজন রাসূল।" ফিরাউন হুকুম দিলোঃ “তাকে আমার সামনে হাজির কর।” সুতরাং হযরত মূসা (আঃ) হযরত হারূণকে (আঃ) সাথে নিয়ে ফিরাউনের নিকট হাজির হলেন এবং তাকে বললেনঃ “আমরা আল্লাহর রাসূল। তুমি আমাদের সাথে বানী ইসরাঈলকে পাঠিয়ে দাও এবং তাদের প্রতি জুলুম করো না। আমরা বিশ্বপ্রতিপালকের নিকট থেকে আমাদের রিসালাতের প্রমাণাদি ও মুজিযা নিয়ে আগমন করেছি। তুমি আমাদের কথা মেনে নাও, তাহলে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হবে।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) যে পত্র রোমক সম্রাট হিরাত্মািসের নামে পাঠিয়ে ছিলেন তাতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম' এরপরে লিখিত ছিলঃ “এই পত্রটি আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদের (সঃ) পক্ষ হতে রোমক সম্রাট হিরাকিয়াসের নামে লিখিত। যে হিদায়াতের অনুসরণ করে তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর তুমি ইসলাম গ্রহণ কর, শান্তি লাভ করবে। আল্লাহ তাআলা তোমাকে দ্বিগুণ পুরস্কার প্রদান করবেন।”মুসাইলামা কাযযাব সত্যবাদী ও সত্যায়িত রাসূলকে (সঃ) একটি পত্র লিখেছিলেন যাতে লিখিত ছিলঃ “এই পত্রটি আল্লাহর রাসূল মুসাইলামার পক্ষ হতে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদের (সঃ) নামে লিখিত। আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি আপনাকে শরীক করে নিয়েছি। শহর আপনার জন্যে এবং গ্রাম আমার জন্যে। এই কুরায়েশরা তো বড়ই অত্যাচারী লোক।” তার এই পত্রের জবাবে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে লিখেনঃ “মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (সঃ) পক্ষ থেকে মুসাইলামা কায্যাবের নামে। ঐ ব্যক্তির উপর শান্তি বর্ষিত হোক যে হেদায়াতের অনুসরণ করে। জেনে রেখো যে, যমীনের অধিকারী হলেন আল্লাহ। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তার ওয়ারিস বানিয়ে দেন। পরিণামের দিক দিয়ে ভাল লোক তারাই যাদের অন্তর আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে।মোট কথা আল্লাহর রাসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহও (আঃ) ফিরাউনকে ঐ কথাই বলেন যে, তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক যে সত্যের অনুসারী। অতঃপর তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআ’লর ওয়াহীর মাধ্যমে আমাদেরকে জানানো হয়েছে যে, আল্লাহর শাস্তির যোগ্য শুধু তারাই যারা আল্লাহর কালামকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং তার কথা মানতে অস্বীকার করে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যে ব্যক্তি ঔদ্ধত্যপনা ও হঠকারিতা করে এবং পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দেয়, তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম।" (৭৯:৩৭-৩৯) অন্য জায়গায় রয়েছেঃ “আমি তোমাদেরকে লেলিহান শিখাযুক্ত আগুন হতে ভয় প্রদর্শন করছি, যার মধ্যে শুধু ঐ হতভাগ্যই প্রবেশ করবে যে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেও মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর এক জায়গায় আছেঃ “সে বিশ্বাস করে নাই এবং নামায আদায় করে নাই। বরং সে সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।

Maximize your Quran.com experience!
Start your tour now:

0%