You are reading a tafsir for the group of verses 20:41 to 20:44
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
undefined
3

৪১-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত মূসাকে (আঃ) আল্লাহ তাআলা সম্বোধন করে বলেনঃ হে মূসা (আঃ)! তুমি ফিরাউনের নিকট থেকে পালিয়ে গিয়ে মাদইয়ানে পৌঁছে ছিলে। সেখানে তুমি শ্বশুরবাড়ীতে আশ্রয় পেয়েছিলে এবং শর্ত অনুযায়ী কয়েক বছর ধরে তোমার শ্বশুরের বকরী চরিয়েছিলে। অতঃপর নির্ধারিত সময়ে তুমি তার কাছে পৌঁছেছে। তোমার প্রতিপালকের কোন চাহিদা পূর্ণ হতে বাকী থাকে না এবং কোন ফরমান ছুটে যায় না। তার ওয়াদা অনুযায়ী তার নির্ধারিত সময়ে তোমাদের তার কাছে পৌছা অবশ্যম্ভাবী ব্যাপার ছিল। ভাবার্থ এও হতে পারেঃ তুমি তোমার মর্যাদায় পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ তুমি নবুওয়াত লাভ করেছে। আমি তোমাকে আমার মনোনীত পয়গাম্বর করেছি।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “হযরত আদম (আঃ) ও হযরত মূসার (আঃ) পরস্পর সাক্ষাৎ হয়। তখন হযরত মূসা (আঃ) হযরত আদমকে (আঃ) বলেনঃ “আপনি তো ঐ ব্যক্তি যে, আপনি মানব মণ্ডলীর ভাগ্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছেন এবং তাদেরকে বেহেশত হতে বহিস্কৃত করেছেন?' তখন হযরত আদম (আঃ) হযরত মূসাকে (আঃ) উত্তরে বলেনঃ “আপনি তো ঐ ব্যক্তি যে, আল্লাহ তাআলা আপনাকে স্বীয় রাসূলরূপে মনোনীত করেছেন এবং নিজের জন্যে আপনাকে বেছে নিয়েছেন, আর আপনার উপর তাওরাত অবতীর্ণ করেছেন? জবাবে হযরত মূসা (আঃ) বলেনঃ “" হযরত আদম (আঃ) তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনি কি ওটা আমার সৃষ্টির পূর্বে লিখিত পান নাই?" হযরত মূসা (আঃ) জবাব দেনঃ “ হাঁ, তা-ই পেয়েছি।" অতঃপর হযরত আদম (আঃ) হযরত মূসার (আঃ) অভিযোগ খণ্ডন করে বিজয়ী হলেন।" (হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ) স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)মহান আল্লাহ বলেনঃ হে মূসা (আঃ)! তুমিও তোমার ভ্রাতা আমার নিদর্শনসহ যাত্রা শুরু করো এবং আমার স্মরণে শৈথিল্য করো না। তোমরা দু’জন ফিরাউনের নিকট গমন কর, সে তো সীমালংঘন করেছে।সুতরাং তারা দু'জন ফিরাউনের সামনে আল্লাহর যিকরে লেগে থাকতেন যাতে আল্লাহর সাহায্য তঁারা লাভ করতে পারেন এবং ফিরাউনের শান শওকত নষ্ট হয়ে যায়। যেমন হাদীসে এসেছে যে, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আমার খাটি ও সত্যবাদী বান্দা সেই যে সারা জীবন ধরে আমাকে স্মরণ করে।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা ভ্রাতৃদ্বয় আমার পয়গাম নিয়ে ফিরাউনের নিটক গমন কর। সে মস্তক উঁচু করে রয়েছে এবং আমার অবাধ্যতার সীমালংঘন করেছে। আর নিজের মালিক ও সৃষ্টিকর্তাকে সে ভুলে গেছে।এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ তোমরা তার সাথে নম্র কথা বলবে। এই আয়াতে বড় উপদেশ ও শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। তা এই যে, ফিরাউন হচ্ছে চরম অহংকারী ও আত্মী। পক্ষান্তরে হযরত মূসা (আঃ) হলেন অত্যন্ত ভদ্র ও নির্মল চরিত্রের অধিকারী। এতদসত্ত্বেও আল্লাহ তাআলা তাকে তার সাথে নম্রভাবে কথা বলার নির্দেশ দিচ্ছেন। হযরত ইয়াযীদ রাক্কাশী (রঃ) এই আয়াতটি পাঠ করে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে সেই সত্ত্বা! যিনি শত্রুর সাথেও নরম ব্যবহার করে থাকেন, তাঁর ব্যবহার ঐ ব্যক্তির সাথে কিরূপ হতে পারে যে তার সাথে বন্ধুত্ব রাখে ও তাকে আহ্বান করে।” হযরত অহাব (রঃ) বলেন যে, নরম কথাবার্তা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তাকে বলাঃ আমরি ক্রোধ গোস্বা হতে আমার ক্ষমা ও করুণা অনেক বড়। ইকরামা (রঃ) বলেন যে, নরম কথা বলা দ্বারা আল্লাহর একত্ববাদের দিকে দাওয়াত দেয়া বুঝানো হয়েছে যাতে সে ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ' এই উক্তিকারী হয়ে যায়। হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলো তাকে বলাঃ তোমার প্রতিপালক রয়েছেন। তোমার মৃত্যুর পর তোমাকে তাঁর ওয়াদাকৃত জায়গায় পৌঁছতে হবে, যেখানে জান্নাত ও জাহান্নাম রয়েছে। হযরত সুফইয়ান সাওরী (রঃ) বলেনঃ এর দ্বারা বুঝানো হয়েছেঃ তুমি তাকে আমার দরার উপর এনে দাঁড় করিয়ে দাও। মোট কথা, হে মূসা (আঃ) ও হারূণ (আঃ)! তোমরা ফিরাউনের সাথে নম্রভাবে কথা বলবে, এর ফলে হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় করবে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে নবী (সঃ)! তোমার প্রতিপালকের পথে হিকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে (মানুষকে) আহ্বান কর এবং উত্তম পন্থায় তাদেরকে বুঝাতে থাকো, যাতে তারা বুঝে এবং পথভ্রষ্টতা ও ধ্বংস হতে দূরে থাকে এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকে। আর তাঁর আনুগত্য ও ইবাদতের দিকে ঝুঁকে পড়ে।” (১৬:১২৫) যেমন এক জায়গায় ঘোষিত হয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “এটা উপদেশ হচ্ছে ঐ ব্যক্তির জন্যে যে উপদেশ গ্রহণ করে অথবা ভয় করে।” সুতরাং উপদেশ গ্রহণ করার অর্থ হলো মন্দ কাজ ও ভয়ের জিনিস থেকে সরে যাওয়া এবং ভয় করার অর্থ হলো আনুগত্যের দিকে ঝুঁকে পড়া। হাসান বসরী (রঃ) বলেন যে, তার ধ্বংসের জন্যে দুআ না করা যে পর্যন্ত না তার সমস্ত ওজর শেষ হয়ে যায়। এখানে ইবনু ইসহাক (রঃ) যায়েদ ইবনু আমর ইবনু নুফায়েল এবং অন্য একটি বর্ণনা মতে উমাইয়া ইবনু আবিসসালাতের নিম্ন লিখিত কবিতাংশ বর্ণনা করেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আপনি ঐ সত্ত্বা যে, আপনি স্বীয় অনুগ্রহ ও দয়ায় মূসাকে (আঃ) রাসূল ও আহ্বানকারী রূপে প্রেরণ করেছেন। তাকে আপনি বলেছেনঃ তুমি ও হারূণ (আঃ) বিদ্রোহী ফিরাউনের কাছে গমন কর এবং তাকে বলোঃ তুমিই কি আকাশকে বিনা স্তম্ভে ধারণ করে রেখেছো? তুমিই কি ওটাকে এভাবে বানিয়ে ছো? তুমিই কি ওর মাঝে উজ্জ্বল সূর্য স্থাপন করেছে যা অন্ধকারকে আলোতে পরিবর্তিত করে? এদিকে সকালে ওটা উদিত হলো, ওদিকে দুনিয়া হতে অন্ধকার দূরীভূত হয়ে গেল। আচ্ছা বলতো, মাটি হতে বীজ উদগীরণকারী কে? আর কে ওর মাথায় শীষ সৃষ্টিকারী? এ সব নিদর্শন দ্বারাও কি তুমি আল্লাহকে চিনতে পারলে না?

Maximize your Quran.com experience!
Start your tour now:

0%