আমি তো ইতিপূর্বে আদমের প্রতি নির্দেশ দান করেছিলাম। কিন্তু সে ভুলে গিয়েছিল; আমি তাকে দৃঢ়সংকল্প পাইনি। [১]
[১] ভুলে যাওয়াটা প্রতিটি মানুষের প্রকৃতিগত ব্যাপার। আর ইচ্ছাশক্তির দুর্বলতা ও সংকল্পের অদৃঢ়তাও সাধারণতঃ মানুষের প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। এই দুই দুর্বলতাই শয়তানের কুমন্ত্রণার ফাঁদে পড়ার কারণ হয়ে বসে। উক্ত দুর্বলতার মধ্যে যদি আল্লাহর আদেশের অবাধ্যাচরণ ও অন্যথাচরণের সংকল্প শামিল না থাকে, তাহলে ভুলে যাওয়া বা ইচ্ছার দুর্বলতার ফলে ঘটে যাওয়া ত্রুটি নবুঅতের নিষ্কলুষতা ও পূর্ণতার প্রতিকূল নয়। কারণ, ত্রুটির পর তড়িঘড়ি লজ্জিত হয়ে নবী আল্লাহর দরবারে মাথা নত করেন তথা তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনায় মশগুল হয়ে পড়েন। (যেমন আদম (আঃ) করেছিলেন।) আদম (আঃ)-কে আল্লাহ বুঝিয়ে বলেছিলেন যে, শয়তান তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। সে যেন তোমাদেরকে পাকে-প্রকারে জান্নাত হতে বের না করে দেয়। এই নির্দেশকেই মহান আল্লাহ এখানে عَهد বলে উল্লেখ করেছেন। আদম (আঃ) সে নির্দেশ ভুলে গিয়েছিলেন। মহান আল্লাহ আদম (আঃ)-কে এক বৃক্ষের নিকট যেতে তথা সেই বৃক্ষ হতে কিছু খেতে নিষেধ করেছিলেন। আদম (আঃ)-এর অন্তরেও এ কথা ছিল যে, তিনি ঐ বৃক্ষের নিকট যাবেন না। কিন্তু যখন শয়তান আল্লাহর কসম খেয়ে এটা বুঝাতে চাইল যে, এই গাছে বা ফলে এমন প্রভাব আছে, যদি তা কেউ একবার খেয়ে নেয়, তাহলে সে অনন্তকালীন জীবন ও চিরস্থায়ী রাজত্ব লাভ করবে। তখন তিনি নিজ সংকল্পের উপর অটল থাকতে পারলেন না। আর সংকল্পে স্থির না থাকার ফলে শয়তানের চক্রান্তের শিকার হয়ে পড়লেন।