১০৬-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ (আরবি) (জাহান্নামে কাফির ও পাপীদের অবস্থা এইরূপ হবে যে,) তাতে তাদের চীৎকার ও আর্তনাদ হতে থাকবে। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবি) হয় কষ্ঠে এবং (আরবি) হয় বক্ষে। জাহান্নামের শাস্তির কারণেই তাদের অবস্থা এইরূপ হবে। আমরা এর থেকে আল্লাহ তাআ’লার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।(আরবি) এ ব্যাপারে ইমাম আবু জাফর ইবনু জারীর (রঃ) বলেনঃ কোন কিছু চিরস্থায়ীত্ব বুঝাবার সময় আরববাসীদের পরিভাষায় বলা হতো: (আরবি) অর্থাৎ “এটা আসমান ও যমীনের চিরস্থায়ীত্বের মতো চিরস্থায়ী। অনুরূপভাবে তারা বলতোঃ (আরবি) অর্থাৎ যতদিন পর্যন্ত রাত্রি ও দিবসের বিবর্তন চলবে, ততদিন পর্যন্ত সে বাকী ও স্থায়ী থাকবে।” সুতরাং (আরবি) দ্বারা আল্লাহ তাআ’লা চিরস্থায়ীত্ব বুঝাতে চেয়েছেন, শর্ত হিসেবে তিনি এ শব্দগুলি ব্যবহার করেন নাই তাছাড়া এও হতে পারে যে, এই আসমান ও যমীনের পরে আখেরাতে অন্য আসমান ও যমীন হবে। সুতরাং এখানে (আরবি) উদ্দেশ্য। কেননা, হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, প্রত্যেক জান্নাতের আসমান ও যমীন রয়েছে। এরপরে আল্লাহ তাআ’লার অভিপ্রায়ের বর্ণনা রয়েছে। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবি)অর্থাৎ “তোমাদের অবস্থান স্থল হচ্ছে জাহান্নাম। তোমরা তার মধ্যে চিরকাল থাকবে, তবে যদি আল্লাহ (জাহান্নাম হতে বের করতে) চান তাহলে সেটা অন্য কথা, নিশ্চয় আল্লাহ বিজ্ঞানময়, মহাজ্ঞাতা।” (৬: ১২৮) এই স্বাতন্ত্রকরণের ব্যাপারে বহু উক্তি রয়েছে, যা শায়েখ আবুল ফারাজ ইবনু জাওযী (রঃ) তাঁর ‘যাদুস্ সায়ের’ নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এবং আরও অনেক তাফসীরকারক নকল করেছেন। ইমাম আবু জাফর ইবনু জারীর (রঃ) হযরত খা’লিদ ইবনু মা’দান (রঃ), যহ্হাক (রঃ), কাতাদা’ (রঃ) এবং ইবনু সিনানের (রঃ) এই উক্তিটি পছন্দ করেছেন যে, এই পৃথকিকরণ বা স্বাতন্ত্র্য প্রত্যাবর্তিত হবে একত্ববাদী পাপীদের দিকে। এর তাফসীরে পূর্ববর্তী কয়েকজন মনীষী হতে বড়ই গারীব উক্তি বর্ণিত হয়েছে। কাতাদা’ (রঃ) বলেন যে, এ সম্পর্কে পূর্ণজ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআ’লারই রয়েছে।
0%