তারাই বলে, ‘আল্লাহর রসূলের কাছে যারা আছে তাদের জন্য ব্যয় করো না; যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে।’[১] বস্তুতঃ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর ধন-ভান্ডার তো আল্লাহরই।[২] কিন্তু মুনাফিক (কপট)রা তা বুঝে না। [৩]
[১] এক যুদ্ধে (যাকে ঐতিহাসিকগণ 'মুরাইসী' অথবা 'বানী মুসত্বালাক' বলেন) একজন মুহাজির এবং একজন আনসার সাহাবীর মাঝে ঝগড়া বেধে যায়। উভয়েই নিজের নিজের সাহায্যের জন্য মুহাজির ও আনসার সাহাবীদেরকে ডাকাডাকি শুরু করেন। এটাকে কেন্দ্র করে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই (মুনাফিক) আনসারদেরকে বলল যে, 'তোমরা মুহাজিরদেরকে সাহায্য করেছ এবং তাঁদেরকে নিজেদের সাথে রেখেছ। এখন দেখ তার ফল কি সামনে আসছে। অর্থাৎ, তোমাদেরই খেয়ে তোমাদেরকেই দাঁত দেখাচ্ছে! (তোমরা আসলে দুধ-কলা দিয়ে কাল সাপ পুষছ!) আর এর চিকিৎসা হল এই যে, তাঁদের জন্য ব্যয় করা বন্ধ করে দাও। দেখবে তাঁরা আপনা-আপনিই কেটে পড়বে।' সে (আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই) এ কথাও বলেছিল যে, 'আমরা (যারা সম্মানী লোক তারা) এই হীন (মুহাজির) লোকগুলোকে মদীনা থেকে বহিষ্কার করে দেব।' যায়েদ ইবনে আরক্বাম (রাঃ) তার এই জঘন্য কথাবার্তা শুনে নেন এবং রসূল (সাঃ)-কে তা জানিয়ে দেন। তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে সে পরিষ্কার অস্বীকার করে দেয়। ফলে যায়েদ ইবনে আরক্বাম (রাঃ) চরমভাবে ব্যথিত হন। মহান আল্লাহ যায়েদ ইবনে আরক্বাম (রাঃ)-এর সত্যবাদিতা প্রমাণের জন্য সূরা মুনাফিক্বুন অবতীর্ণ করেন এবং এর দ্বারা ইবনে উবায়ের নোংরা চরিত্রের মুখোশ পূর্ণরূপে খুলে দেন। (বুখারী, সূরা মুনাফিকূনের তফসীর পরিচ্ছেদ)[২] অর্থাৎ, মুহাজিরদের রুযীর মালিক তো আল্লাহ। কারণ, সকল প্রকার রুযীর ভান্ডার তাঁরই কাছে। তিনি যাকে চান তা দান করেন এবং যাকে চান না বঞ্চিত করেন।[৩] মুনাফিকরা এই বাস্তবতাকে জানে না। তাই তারা মনে করে যে, আনসাররা যদি মুহাজিরদের প্রতি সাহায্যের হাত না বাড়ায়, তাহলে তাঁরা না খেয়ে মারা যাবেন।
০%