আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন; অতঃপর শুক্রবিন্দু হতে,[১] অতঃপর তোমাদেরকে করেছেন জোড়া জোড়া। আল্লাহর অজ্ঞাতসারে কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না অথবা সন্তানও প্রসব করে না।[২] কারও আয়ু বৃদ্ধি হলে অথবা তার আয়ু হ্রাস পেলে তা তো ‘লাওহে মাহফূয’ (সংরক্ষিত ফলক) অনুসারে হয়। [৩] নিশ্চয় এ আল্লাহর জন্য সহজ।
[১] অর্থাৎ, তোমাদের পিতা আদম (আঃ)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তার পর তোমাদের বংশ অব্যাহত রাখার জন্য মানুষ সৃষ্টির মাধ্যমকে বীর্যের সাথে সম্পৃক্ত করে দিয়েছি; যা পুরুষের পিঠ থেকে নির্গত হয়ে নারীর গর্ভাশয়ে প্রবিষ্ট হয়।[২] অর্থাৎ, তাঁর নিকট কোন বস্তুই লুক্কায়িত নয়, এমনকি মাটির উপর যে পাতা পড়ে তার শব্দও এবং পৃথিবীর অন্ধকারে (মাটির ভিতর) অঙ্কুরিত হতে থাকা বীজের খবরও তিনি রাখেন।(সূরা আনআম ৬:৫৯ আয়াত দ্রঃ)[৩] এর অর্থ এই যে, আয়ু কম-বেশি হওয়া আল্লাহর ফায়সালা ও তকদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে। এ ছাড়া অতিরিক্ত কিছু কারণও আছে যার ফলে আয়ু কম-বেশি হয়। আয়ু বৃদ্ধির কারণসমূহের মধ্যে একটি কারণ হল, আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা; যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আর তা কম হওয়ার কারণসমূহের মধ্যে একটি কারণ বেশি বেশি পাপ করা। উদাহরণ স্বরূপঃ কোন মানুষের আয়ু সত্তর বছর। কিন্তু কখনো বৃদ্ধির কারণ বিদ্যমান থাকায় আল্লাহ তাতে বৃদ্ধি করে দেন। আর যখন হ্রাস পাওয়ার কারণ বিদ্যমান থাকে, তখন হ্রাস করে দেন। পরন্তু এ হ্রাস-বৃদ্ধির কথা তিনি 'লাওহে মাহফুয'-এ লিখে রেখেছেন। ফলে আয়ুর কম-বেশি হওয়া (فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلا يَسْتَقْدِمُونَ) অর্থাৎ, যখন তাদের সময় আসবে তখন তারা মুহূর্তকালও বিলম্ব বা ত্বরা করতে পারবে না। (সূরা আ'রাফ ৭:৩৪ আয়াত) এর পরিপন্থী নয়। মহান আল্লাহর এই কথা দ্বারাও তার সমর্থন পাওয়া যায় (يَمْحُوا اللهُ مَا يَشَاءُ وَيُثْبِتُ وَعِنْدَهُ أُمُّ الْكِتَابِ) অর্থাৎ, আল্লাহ যা ইচ্ছা মিটিয়ে দেন এবং বহাল রাখেন। আর মূলগ্রন্থ তাঁর কাছেই রয়েছে।" (সূরা রা'দ ১৩:৩৯ আয়াত, ফাতহুল ক্বাদীর)