আমি তো তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি শুধু করুণা রূপেই প্রেরণ করেছি। [১]
[১] এর অর্থ হল, যে ব্যক্তি রসূল (সাঃ)-এর রিসালতের উপর ঈমান আনবে সে আসলে উক্ত করুণা ও রহমতকে গ্রহণ করবে। পরিণামে দুনিয়া ও আখিরাতে সে সুখ ও শান্তি লাভ করবে। আর যেহেতু রসূল (সাঃ)-এর রিসালাত বিশ্বজগতের জন্য, সেহেতু তিনি বিশ্বজগতের রহমত রূপে; অর্থাৎ নিজের শিক্ষা দ্বারা বিশ্ববাসীকে ইহ-পরকালের সুখের সন্ধান দিতে প্রেরিত হয়েছিলেন। কিছু উলামা তাঁকে এই অর্থেও বিশ্বজগতের জন্য করুণা বলেছেন যে, তাঁর কারণেই এই উম্মত (তাঁর দাওয়াত গ্রহণ অথবা বর্জনকারী মুসলিম অথবা কাফের সকলেই) নির্মূলকারী ব্যাপক ধ্বংসের হাত হতে রেহাই পেয়েছে। যেভাবে পূর্ববর্তী বহু জাতিকে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে, উম্মাতে মুহাম্মাদিয়াকে ঐ রকম আযাব দিয়ে ধ্বংস করে নির্মূল করা হয়নি। বহু হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, মুশরিকদের উপর বদ্দুআ ও অভিশাপ না করাও ছিল তাঁর করুণারই একটি বিশেষ অংশ। তাঁকে তাদের উপর বদ্দুআ করতে আবেদন করা হলে তিনি বলেছিলেন, "আমি অভিশাপকারীরূপে প্রেরিত হইনি; আমি কেবল করুণারূপে প্রেরিত হয়েছি।" (মুসলিম ২০০৬নং) অনুরূপ রাগান্বিত অবস্থায় কোন মুসলিমকে তাঁর অভিশাপ বা গালিমন্দ করাকে কিয়ামতের দিন তার জন্য রহমতের কারণ হওয়ার দু'আ করাও তাঁর দয়ারই একটি অংশ। (আহমাদ ২/৪৩৭, আবুদাউদ ৪৬৫৯নং, সিলসিলাহ সহীহাহ আলবানী ১৭৫৮নং) এই কারণেই একটি হাদীসে তিনি বলেছেন, "আমি রহমতের মূর্তপ্রতীক হয়ে আল্লাহর পক্ষ হতে বিশ্বজগতের জন্য একটি উপহার।" (সহীহুল জামে' ২৩৪৫নং)
০%