امن يجيب المضطر اذا دعاه ويكشف السوء ويجعلكم خلفاء الارض االاه مع الله قليلا ما تذكرون ٦٢
أَمَّن يُجِيبُ ٱلْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ ٱلسُّوٓءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَآءَ ٱلْأَرْضِ ۗ أَءِلَـٰهٌۭ مَّعَ ٱللَّهِ ۚ قَلِيلًۭا مَّا تَذَكَّرُونَ ٦٢
اَمَّنْ
یُّجِیْبُ
الْمُضْطَرَّ
اِذَا
دَعَاهُ
وَیَكْشِفُ
السُّوْٓءَ
وَیَجْعَلُكُمْ
خُلَفَآءَ
الْاَرْضِ ؕ
ءَاِلٰهٌ
مَّعَ
اللّٰهِ ؕ
قَلِیْلًا
مَّا
تَذَكَّرُوْنَ
۟ؕ

নাকি তিনি, যিনি আর্তের ডাকে [১] সাড়া দেন, যখন সে তাঁকে ডাকে এবং বিপদ দূরীভূত করেন [২], আর তোমাদেরকে যমীনের প্রতিনিধি বানান [৩]। আল্লাহ্‌র সাথে অন্য কোন ইলাহ আছে কি? তোমরা খুব অল্পই শিক্ষা গ্রহণ করে থাক।

[১] مضطر শব্দটি اضطرار থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ, কোন অভাব হেতু অপারগ ও অস্থির হওয়া। এটা তখনই হয়, যখন কোন হিতকামী, সাহায্যকারী ও সহায় না থাকে। কাজেই এমন ব্যাক্তিকে مضطر বলা হয়, যে দুনিয়ার সব সহায় থেকে নিরাশ হয়ে একান্তভাবে আল্লাহ্‌ তা‘আলাকেই সাহায্যকারী মনে করে এবং তাঁর প্রতি মনোযোগী হয়। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রকম পরিস্থিতিতে যে দো‘আ করতে বলেছেন তা হলোঃ

أللّهُمَّ رَحْمَتَكَ أرْجُوْ فَلَا تَكِلنِيْ إلى نَفْسِيْ طَرْفَةَعَيْنٍ، وأصْلِحْ لِيْ كُلَّه لا إلَّا أنْت

‘হে আল্লাহ্‌! আমি আপনার রহমতের আশা করি। অতএব, মুহূর্তের জন্যেও আমাকে আমার নিজের কাছে সমৰ্পণ করবেন না। আর আপনি আমার সবকিছু ঠিক-ঠাক করে দিন। আপনি ছাড়া কোন হক্ক ইলাহ নেই।’ [আবু দাউদঃ ৫০৯০, মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৪২]

[২] নিঃসহায়ের দো‘আ কবুল হওয়ার মূল কারণ হলো, আন্তরিকতা। কারণ, দুনিয়ার সব সহায় থেকে নিরাশ এবং সম্পর্কাদি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একমাত্র আল্লাহ্‌ তা‘আলাকেই কাৰ্যোদ্ধারকারী মনে করে দো‘আ করার মাধ্যমে ইখলাস প্রকাশ পায়। আল্লাহ্‌ তা‘আলার কাছে ইখলাসের মর্তবা ও মর্যাদাই আলাদা। মুমিন, কাফের, পরহেযগার ও পাপিষ্ঠ নির্বিশেষে যার কাছ থেকেই ইখলাস পাওয়া যায় তার প্রতিই দুনিয়াতে আল্লাহ্‌ তা‘আলার করুণা হয়। [ফাতহুল কাদীর]। যেমন কোন কোন আয়াতেও এসেছে যে, “তিনিই তোমাদেরকে জলে-স্থলে ভ্ৰমণ করান। এমনকি তোমরা যখন নৌযানে আরোহন কর এবং সেগুলো আরোহী নিয়ে অনুকূল বাতাসে বেরিয়ে যায় এবং তারা তাতে আনন্দিত হয়, তারপর যখন দমকা হাওয়া বইতে শুরু করে এবং চারদিক থেকে উত্তাল তরংগমালা ধেয়ে আসে, আর তারা নিশ্চিত ধারণা করে যে, এবার তারা ঘেরাও হয়ে পড়েছে, তখন তারা আল্লাহ্‌কে তাঁর জন্য দ্বীনকে একনিষ্ঠ করে ডেকে বলেঃ ‘আপনি আমাদেরকে এ থেকে বাঁচালে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখন তারা যমীনে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করতে থাকে।” [সূরা ইউনুসঃ ২২-২৩] আরও এসেছে, ‘‘তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা আনুগত্যে বিশুদ্ধ হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্‌কে ডাকে। তারপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন, তখন তারা শির্কে লিপ্ত হয়” [সূরা আল-আনকাবূতঃ ৬৫] অনুরূপভাবে বিভিন্ন হাদীসে যাদের দো‘আ কবুল হয় বলে ঘোষণা এসেছে সেটার গূঢ় রহস্যও এ ইখলাসে নিহিত। যেমন, উৎপীড়িতের দো‘আ, মুসাফিরের দো‘আ। অনুরূপভাবে সন্তানের জন্য দো‘আ বা বদ-দো‘আ। এসব ঐ সময়ই হয় যখন তাদের আর করার কিছু থাকে না। তারা একান্তভাবেই আল্লাহ্‌র দিকে ধাবিত হয়। তখনকার অবস্থা অনুযায়ী আল্লাহ্‌ তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেন। যদিও তিনি জানেন যে, তারা অচিরেই শির্কের দিকে ফিরে যাবে। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]

[৩] এখানে কাদের স্থলাভিষিক্ত করেন সেটা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। আর তাই সেটা নির্ধারণে কয়েকটি মত রয়েছেঃ এক, তোমাদের এক প্রজন্মকে অন্য প্রজন্মের শেষে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেন। অর্থাৎ এক প্রজন্ম ধ্বংস করেন এবং তার স্থানে অন্য প্রজন্মকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এক জাতির পর আর এক জাতির উত্থান ঘটান। দুই, তোমাদের সন্তানদেরকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করেন। তিন, মুসলিমদেরকে কাফেরদের স্থলাভিষিক্ত করেন, তাদের যমীন ও ভিটে-মাটিতে মুসলিমদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করেন। [ফাতহুল কাদীর]